প্রতীকী ছবি।
ভরদুপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে রেল মাফিয়াকে গুলি করে খুনের পরে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল পুলিশকে। তারপরই দুষ্কর্ম ঠেকাতে খড়্গপুর শহরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে উদ্যোগী হয় পুরসভা। সিসি ক্যামেরার উদ্বোধন করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাজেই আসছে না পুরসভার নজর ক্যামেরা!
শুক্রবার খড়্গপুরের মালঞ্চ রোডের বিবেকানন্দ পল্লি মোড়ের কাছে জেলবন্দি রেলমাফিয়া বাসব রামবাবুর বাড়ি তাক করে গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। বাড়ির সামনে গুলিরও খোলও মেলে। তদন্তে নেমে পুলিশ রামবাবুর বাড়ির উল্টো দিকের এক নার্সিংহোমের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ হাতে পেয়েছে। তবে সেই ফুটেজে দুষ্কৃতীদের মুখের স্পষ্ট ছবি নয়। অথচ অপরাধপ্রবণ বলে পরিচিত এই মালঞ্চ রোডে সিসি ক্যামেরা বসানোয় গুরুত্ব দিয়েছিল পুরসভা। এই সড়কেই গৌতম চৌবে, মানস চৌবে খুনের মতো ঘটনা ঘটেছিল। তারপরও চুরি, ছিনতাইয়ের বহু ঘটনা ঘটেছে। এমন রাস্তায় পুর-উদ্যোগে বসানো ক্যামেরার ফুটেজ কেন কাজে আসছে না, সেই প্রশ্ন উঠছে।
এ বিষয়ে খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আমরা প্রথম পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে প্রায় ৪০টি সিসি ক্যামেরা বসিয়েছিলাম। কিন্তু সর্বত্র বসানো সম্ভব হয়নি। পরে ইন্দা ও পুরীগেট উড়ালপুলে ক্যামেরা বসাব। মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ এবং পুলিশও বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা বসাবে। এর পরেও কোথাও ফাঁক থাকলে পুলিশের পরামর্শ মেনে নিশ্চয়ই ক্যামেরা লাগাব।”
বছর দেড়েক আগে নিউ সেটলমেন্ট তৃণমূল কার্যালয়ে রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু খুনের পরে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল শহরের নিরাপত্তা। তারপরেই ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক জনসভায় পুরসভার বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার উদ্বোধন হয়। কিন্তু ওই ক্যামেরা যে কাজে আসছে না, বেশ কয়েকটি ঘটনায় তা বোঝা গিয়েছে। মালঞ্চ রোডেরই হারা কারখানা সংলগ্ন এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে গত বছর ৫ মে ২২ লক্ষ টাকা লুঠের সময় দুষ্কৃতীরা সিসি ক্যামেরা ভেঙে দিয়েছিল। সেই ঘটনার কিনারা হয়নি। গত অক্টোবরের কুমোরপাড়ার যুবকের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনাও সিসিটিভিতে ধরা পড়েনি। মূল সড়কে থাকা সিসি ক্যামেরা গলিপথের দুষ্কর্ম ঠেকাতে কাজে আসেনি।
এখনও মালঞ্চ রোডের অতুলমণি স্কুল মোড়, বিস্কুট কারাখানা মোড়, সেনচক মোড়-সহ কয়েকটি মোড় ছাড়া সব মোড়ে পুরসভার সিসিটিভি নেই। বাদ পড়েছে বিবেকানন্দ পল্লি মোড়ও। ফলে, শুক্রবারের গুলিচালনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা যায়নি।
খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীও বলছেন, “ঘটনাস্থলে নার্সিংহোমের যে সিসিটিভি ফুটেজ আমরা পেয়েছি সেখানে দুষ্কৃতীদের ছবি দূর থেকে আসায় মুখ স্পষ্ট হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy