E-Paper

পাম্পে কর্মরত মা, পাশে খাতা-পেন হাতে বসে মেয়ে

ভাইরাল হওয়া সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে কাজের ফাঁকে পেন-খাতা নিয়ে বসে থাকা নিজের মেয়ের সঙ্গে কথা বলছেন পেট্রল পাম্পের কর্মী টুম্পা সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৩
ভাইরাল হওয়া সেই ছবি। ছবি সৌজন্য সমাজ মাধ্যম

ভাইরাল হওয়া সেই ছবি। ছবি সৌজন্য সমাজ মাধ্যম নিজস্ব চিত্র।

গাড়ির ট্যাঙ্কে জ্বালানি তেল ভরে দিচ্ছেন মহিলা কর্মী। মহানগর কলকাতায় এ দৃশ্য পরিচিত। তবে ধীরে ধীরে জেলা সদর ও মফস্‌সলে মহিলাদের এই কাজে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। অনেক সময় মহিলারা কাজের ফাঁকে সন্তানদের দেখাশোনা করার জন্য নিয়ে আসছেন পাম্পে। সম্প্রতি বাঁকুড়া শহরের গোবিন্দনগরের একটি পেট্রল পাম্পে এক মহিলা কর্মী ও তাঁর সন্তানের ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে কাজের ফাঁকে পেন-খাতা নিয়ে বসে থাকা নিজের মেয়ের সঙ্গে কথা বলছেন পেট্রল পাম্পের কর্মী টুম্পা সিংহ। সিউড়িতে তাঁর শ্বশুরবাড়ি হলেও একমাত্র সন্তান আয়োসিকে নিয়ে বর্তমানে বাপের বাড়ি বাঁকুড়ার খেজুরবেদ্যায় থাকেন টুম্পা। খেজুরবেদ্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে মেয়ে। সম্প্রতি টুম্পার বাবা- মা কিছু দিনের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। বাড়িতে কেউ না থাকায় তখন মেয়েকে নিজের সঙ্গে পাম্পে নিয়ে আসতেন টুম্পা।

ওই পাম্পের কর্ণধার নিবেদিতা বিশ্বাস বলেন, ‘‘মা কাজ করছেন, পাশে মেয়ে পড়াশোনা করছে। কাজের ফাঁকে মা মেয়ের উপরে নজরও রাখছেন। দৃশ্যটা সত্যিই মনে দাগ কেটেছিল। আমার ছেলে সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করতেই ভাইরাল হয়ে যায়।’’

টুম্পা বলেন, ‘‘বাবার মুদিখানা দোকান রয়েছে। কিন্তু মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করতে রোজগারের টানেই আমি এই কাজ নিয়েছি। বাড়িতে আমি না থাকলে মা-বাবাই মেয়ের দেখাশোনা করে। কিন্তু তাঁরা না থাকলে মেয়েকে তো একা বাড়িতে রেখে আসতে পারি না। তাই ক’টি দিনের জন্য ওকে নিয়ে এসেছিলাম।’’

টুম্পার বাড়ি থেকে পেট্রল পাম্পের দূরত্ব ২০ কিলোমিটারের বেশি। প্রতিদিন বাসে কর্মস্থলে যাতায়াত করেন তিনি। কাজের প্রতি টুম্পার মনোযোগ দেখে অভিভূত তাঁর সহকর্মীরাও। ওই পাম্পের কর্মী গণেশ চট্টোপাধ্যায়, জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুবই লড়াকু মানসিকতার মেয়ে টুম্পা। কাজেও খুব দায়িত্বশীল। যাঁরা ভাবেন পেট্রল পাম্পের কাজে মেয়েরা মানিয়ে নিতে পারেন না, টুম্পা তাঁদের ভুল প্রমাণ করেছেন।’’ আপাতত আয়োসিকে উচ্চশিক্ষিত করার স্বপ্ন বুনে চলেছেন টুম্পা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bankura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy