এই ধরনের পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
কাটমানি ফেরত চেয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সামনে এসেছে জনরোষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরে আমজনতা শাসকদল তৃণমূলের নেতাদের কাছে প্রকাশ্যে অর্থ ফেরতের দাবি জানাচ্ছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে এখনও তেমন ঘটনা ঘটেনি। তবে কাটমানি নিয়ে শাসককে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের হাতিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে জেলা তৃণমূলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধির পেল্লায় সব বাড়ির ছবি। কোনওটা ফেসবুকে বিজেপির পেজে শেয়ার করা হয়েছে, আবার কোনওটা ঘুরছে হোয়াটসঅ্যাপে। ছবিগুলির ক্যাপশনে কোথাও স্পষ্টভাবে, কোথাও বা পরোক্ষে জানানো হচ্ছে, আমজনতার টাকা লুটেই তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা এমন সব প্রাসাদ গড়েছেন। ‘বিজেপি তমলুক’ নামে একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানার তিনতলা বাড়ির ছবি। সঙ্গে লেখা, ‘এই প্রাসাদ প্রতিম কয়েক কোটি টাকার অট্টালিকাটি হল শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বর্তমান সভাপতি দিবাকর জানার (লালু)। দিদির দেখানো পথে ভাইপোদের ব্যক্তিগত উন্নয়ন’। দিবাকর কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা। তমলুক শহর সংলগ্ন ধলহরা পঞ্চায়েত অফিসের কাছে ওই বাড়িটি গেস্ট হাউস হিসাবে তৈরি হচ্ছে বলে খবর।
দিবাকর বলছেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ করে বলছি, কারও থেকে একটা টাকা নিইনি। আমার গয়না এবং ঠিকাদারি ব্যবসা রয়েছে। ব্যাঙ্ক ঋণে ওই গেস্ট হাউস তৈরি করছি। সব নথি রয়েছে। কারও অভিযোগ থাকলে প্রশাসনে জানাক।’’ দিবাকরের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে।’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরা আর একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্যের বাড়ির ছবি। সেই ছবিতে লেখা, ‘কাটমানির ফসল। না এটা কোনও ভিন্ রাজ্যের কোনও মন্দির বা প্রাসাদ না। শুনলাম নন্দীগ্রামের কাছে নাকি কোনও এক বিধায়কের পর্ণকুটির’! ভাইরাল হয়েছে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের ‘জাহাজ বাড়ি’র ছবিও। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে নন্দীগ্রামে প্রশাসনিক সভায় এসে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যে বাড়ি দেখে ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন।
অমিয়কান্তির দাবি, ‘‘প্রমাণ ছাড়া বিজেপি যে ভাবে এ সব করছে মানুষ তা মেনে নেবে না।’’ আর সুফিয়ানের বক্তব্য, ‘‘আমার মাছের ব্যবসা, ট্রলার রয়েছে। তা থেকে আয় করেছি। বাড়ি তৈরির জন্য ঋণও নিয়েছি। আমি টাকা নিয়েছি, সেটা কেউ প্রমাণ করুক।’’
বিজেপি’র তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের দাবি, ‘‘আমাদের দলের তরফে সরাসরি এমন প্রচার হচ্ছে না। তবে তৃণমূল নেতাদের ওই সব চোখ ধাঁধানো বাড়ি মানুষ চোখের সামনে দেখছেন। তাঁরা তো বাড়ি তৈরির টাকার উৎস জানতে প্রশ্ন করতেই পারেন।’’ আর তৃণমূল জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘অনুমানের ভিত্তিতে এ সব প্রচার করছে বিজেপি। কী ভাবে এক মোকাবিলা করতে হয় আমরা জানি।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy