দাতা: বিশেষ শীততাপনিয়ন্ত্রিত বাসে চলছে শিবির। —নিজস্ব চিত্র।
টকটকে লাল রঙের পেল্লায় বাস। তার ভেতরে চারটি শয্যা, বিশ্রাম নেওয়ার আলাদা জায়গা, শৌচাগার। পুরোটাই শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত।
স্বাস্থ্য দফতরের এমন ঝাঁ চকচকে বাসেই মঙ্গলবার রক্তদান শিবির হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনিতে, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বরে। হাসপাতালে চারতলা ভবনের কোথাও এসি নেই। তাই বাসের ভিতরে আরামে রক্ত দিতে পেরে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্য কর্মীরা খুশি। রক্ত দেওয়ার পরে চিকিৎসক স্বর্ণালী দে-র বক্তব্য, “এই প্রথম রক্ত দিলাম। বাসের মধ্যে দারুণ বন্দোবস্ত। কোনও সমস্যা হয়নি।” রত্না মাহাতো নামে এক স্বাস্থ্যকর্মীর কথায়, “এমন বাস এই প্রথম দেখলাম। রক্তদানও এই প্রথম বার।” শালবনিতে এ দিন পারদ প্রায় ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। এই গরমে এসি বাস না পেলে শিবির আয়োজনে সমস্যা হত বলে মানছেন শালবনির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিষেক মিদ্যাও।
ফি বছরই গরমে রক্তের আকাল দেখা দেয়। শিবির কম হওয়ায় রক্তসঙ্কট চরমে পৌঁছয়। পরিস্থিতি দেখে এ বার তৎপর হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই পুলিশের উদ্যোগে থানা স্তরে আর স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে হাসপাতালে রক্তদান শিবির শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খব, প্রচণ্ড গরমে রক্তদাতাদের যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য সন্ধের পরে শিবির হোক এমনটাই চান মুখ্যমন্ত্রী। না হলে অন্তত এসি ঘরে শিবির করার পক্ষপাতী তিনি। জঙ্গলমহলের সর্বত্র সন্ধের পরে বা এসি ঘরে শিবির করার জায়গা নেই। সব দিক বিচার করে এসি বাসে রক্তদান শিবিরের সিদ্ধান্ত হয়। শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পরে আজ, বুধবার এই এসি বাসেই রক্তদান শিবির হবে বেলদা থানা চত্বরে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা এই দিন বলেছেন, “তীব্র গরমে রক্তদাতাদের কষ্ট কমাতেই এই উদ্যোগ।”
এসি ভলভো এই বাসটি রক্তদানের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি। গায়ে লেখা— ‘ডোনেট ব্লাড, সেভ লাইভস্’ (রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচান)। বাসের ভেতরে রয়েছে চারটি রেফ্রিজারেটর। এক-একটিতে ৫০ ইউনিট করে রক্ত রাখা যায়। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২০০ ইউনিট রক্ত রাখার ব্যবস্থা রয়েছে বাসটিতে। রক্তদাতাদের কথা ভেবে রাখা হয়েছে টেলিভিশন, মিউজিক সিস্টেমও। শালবনির শিবিরে ৫৯ জন রক্ত দিয়েছেন। রক্তদাতাদের জন্য জলখাবার আর আইসক্রিমের ব্যবস্থাও ছিল। এ দিন শালবনিতে এসেছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবু। রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার ফাঁকে তিনি বলেন, “আপাতত দু’দিনের জন্য জেলায় বিশেষ এই বাসটি এসেছে। ফের যাতে আসে, সেই চেষ্টা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy