সেই বাঁধ। নিজস্ব চিত্র
কাজ শেষের আগেই ঠিকাদারকে পুরো টাকা মিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পুরসভার বিরুদ্ধে। ঘাটাল শহরে বিতর্কিত সেই বাঁধের রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল হইচই। পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলনে নেমেছিল বিরোধী দলগুলি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই বাঁধের কাজ শেষ করতে পারেনি পুরসভা। অতিবৃষ্টির পরে তারই ফল ভুগতে হচ্ছে ঘাটালবাসীকে।
শুক্রবারও জসমগ্ন ঘাটাল ও দাসপুরের পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। রূপনারায়ণে নদে চাপ থাকায় থমকে রয়েছে কংসাবতী-শিলাবতীর জল। এর মধ্যে ওই বাঁধের রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ বেড়েছে। ঘাটাল পুরসভার এক সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে ২ নম্বর ওয়ার্ডের আড়গোড়া থেকে সিংহপুর পর্যন্ত চার কিলোমিটার সার্কিট বাঁধ সংস্কার শুরু হয়েছিল। প্রকল্প ব্যয় ছিল ৩ কোটি ১৯ লক্ষ। বাঁধটি শক্তপোক্ত হলে বাঁধ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা উপকৃত হতেন। বন্যা হলে আড়গোড়া ও শুকচন্দ্রপুরের একটি অংশ, রঘুনাথচক, সিংহপুর, বাসুদেবপুর প্রভৃতি ঘাটাল পুর এলাকা ছাড়াও ঘাটাল ব্লকের মনসুকা ইড়পালা, সুলতানপুর পঞ্চায়েতের একাংশের বাসিন্দাদের ওই বাঁধের রাস্তা ধরে ঘাটালে আসতেও সুবিধে হবে। নৌকা ব্যবহার করতে হবে না।
আড়াই বছর আগে কাজ শুরু হওয়া এই সার্কিট বাঁধ ঘিরেই বিতর্কে জড়ায় ঘাটাল পুরসভা। গত ফেব্রুয়ারিতে কাজে টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু কাজ শেষের আগেই পুরো টাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে মিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে পুরসভার বিরুদ্ধে। জুন মাসে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ এ নিয়ে সরব হন। বাঁধ তৈরি ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তা নিয়ে অবশ্য প্রশাসনের কোনও স্তরে তদন্ত শুরু হয়নি। এই নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ রয়েছে। পুর-প্রশাসক বিভাস ঘোষের ব্যাখ্যা, “কাজ দ্রুত গতিতে চলছিল। বন্যা এসে যাওয়ায় কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি। জল নামলেই ফের কাজ শুরু হবে।”
এ দিকে, ঘাটাল শহরের একাংশ এখনও জলের তলায়। প্লাবিত ঘাটাল ও দাসপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। চলছে নৌকা। ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পাল অবশ্য বলেন, “নতুন করে নিম্নচাপ তৈরি না হলে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আর নদীগুলিতে জল বাড়ার খবর নেই।” শুক্রবার জেলার ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর প্রভৃতি এলাকার একাংশও জলমগ্ন ছিল। জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘জেলায় কিছু এলাকা জলমগ্ন আছে। জলমগ্ন এলাকার প্রায় ৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পুর-এলাকাগুলির মধ্যে ঘাটাল, রামজীবনপুর, চন্দ্রকোনার কিছু কিছু ওয়ার্ডে জল জমে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy