ভাঁড় নিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে তিয়াসা। নিজস্ব চিত্র
ছোট্ট কিন্তু বড় দান।
করোনার ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার জন্য মাটির ভাঁড় সঙ্গে নিয়ে রবিবার বিকেলে বাবার সঙ্গে কালেক্টরেটে হাজির হল ছয় বছরের খুদে তিয়াসা মুখোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতির জন্য এখন রবিবারও খোলা থাকছে কালেক্টরেট। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিয়াসার সঙ্গে ছিলেন তার বাবা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে কালেক্টরেটে যাবে বলে জেদ ধরছিল। তাই ওকে এখানে নিয়ে আসা।’’ সব শুনে শুভাশিসকে মেয়েকে নিয়ে মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষের সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মেয়েকে নিয়ে তাঁর সঙ্গেই দেখা করেন শুভাশিস।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, ভাঁড়ে টাকা-পয়সা মিলিয়ে ৩,১১৭ টাকা জমিয়েছিল তিয়াসা। ভাঁড় ভেঙে পুরো টাকাটাই করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর আপৎকালীন ত্রাণ তহবিলে দান করেছে সে। তিয়াসা প্রথমে গোটা ভাঁড়টাই তহবিলে দিতে চেয়েছিল। তাঁকে বোঝানো হয়, তহবিলে গোটা ভাঁড় দেওয়া যায় না।
মেদিনীপুর শহরের নজরগঞ্জের বাসিন্দা তিয়াসার বাবা শুভাশিস শালবনির খাঁদিবাঁধ হাইস্কুলের শিক্ষক। মা শুক্লা বাচিকশিল্পী। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘তিয়াসাকে দফতরে দেখে অবাকই হয়েছিলাম। পরে ওর বাবার কাছ থেকে সব শুনি। ছোট্ট শিশুর এই মানবতাবোধ আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমরা অত্যন্ত খুশি।’’ ওই খুদে শহরের রয়্যাল অ্যাকাডেমির প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। ওই স্কুলের অধ্যক্ষ সত্যব্রত দোলই বলছিলেন, ‘‘আমরা ওর মনের এ ভাবেই উত্তরোত্তর বিকাশ কামনা করছি।’’
তিয়াসার কথায়, ‘‘এখন অনেক মানুষ বিপদে রয়েছে। এটাই তো দরকারি সময়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বাবাকে আবার একটা মাটির ভাঁড় কিনে দিতে বলেছি। সেখানে আবার টাকা-পয়সা জমানো শুরু করব।’ মেয়ে যাতে পরে আরও দান করতে পারে সে কথা মাথায় রেখে শুভাশিসও জানান, লকডাউন উঠলেই ওকে নতুন ভাঁড় কিনে দেওয়া হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy