Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
শিকেয় উঠল মিড ডে মিল নিয়ে নির্দেশ
Coronavirus

চাল-আলু নিতে ভিড়ে পড়ুয়ারাও

সরকারি নির্দেশ মেনে শনিবার থেকে জেলায় হাতে গোনা কিছু প্রাথমিক ও হাইস্কুলে চাল ও আলু বিলি করা হয়।

চালু-আলু নিতে লাইন দিয়েছে পড়ুয়ারাই। কাঁথির একটি স্কুলে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

চালু-আলু নিতে লাইন দিয়েছে পড়ুয়ারাই। কাঁথির একটি স্কুলে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও কাঁথি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ০১:৩৫
Share: Save:

করোনা সতর্কতায় সমস্ত প্রাথমিক ও হাইস্কুল আগামী ১৫ এপ্রিল ছুটি। তবে এই ছুটির মধ্যেই স্কুলের পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের চাল ও আলু বিলির নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। প্রাথমিক সরকারি নির্দেশিকায় সোমবার ও মঙ্গলবার পড়ুয়া পিছু ২ কিলোগ্রাম করে চাল ও আলু বিলির কথা জানানো হয়েছিল। এর জন্য বাজার থেকে আলু কেনার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল স্কুলগুলিকে। গত শনিবার ফের নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হয় সেদিন থেকেই চালু এবং আলু বিলি শুরু করা যাবে। এর জন্য করোনা সতর্কতা বিধি মেনে পড়ুয়াদের পরিবর্তে তাঁদের অভিভাবকদের হাতে চাল-আলু তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে ভিড় এড়িয়ে। সোমবার বিকেলের মধ্যেই চাল ও আলু বিলির কাজ শেষ করতে হবে।

সরকারি নির্দেশ মেনে শনিবার থেকে জেলায় হাতে গোনা কিছু প্রাথমিক ও হাইস্কুলে চাল ও আলু বিলি করা হয়। আর রবিবার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণামত ‘জনতা কার্ফু’ পালন করায় অধিকাংশ বাসিন্দা বাড়ির বাইরে বের হননি। তবে এর মধ্যেও জেলার কিছু প্রাথমিক ও হাইস্কুলে চাল-আলু বিলি করা হয়। ফলে সোমবার জেলার অধিকাংশ প্রাথমিক ও হাইস্কুলে চাল-আলু বিলির ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু করোনা সতর্কতায় সোমবার বিকেল থেকেই আগামী ২৭ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত জেলার তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি, দিঘা ও কোলাঘাট এই পাঁচ শহরে ‘লকডাউন’ ঘোষণায় এ দিন বিকেলের মধ্যেই স্কুলে চাল-আলু বিলি শেষ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে পড়েন প্রাথমিক ও হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

সোমবার সকাল ১০ টা থেকে স্কুলে চাল ও আলু বিলি শুরু করার আগেই জেলার অনেক প্রাথমিক ও হাইস্কুলের সামনে অভিভাবকদের পাশাপাশি স্কুলের পড়ুয়াদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। করোনা সতর্কতায় পড়ুয়াদের চাল-আলু আনতে নিষেধ করা সত্ত্বেও একাংশ পড়ুয়ারা স্কুলে হাজির হন। আর ভিড় এড়ানোর জন্য কমপক্ষে তিন ফুট বজায় রাখার সতর্কতা থাকলেও অনেক স্কুলের সামনেই লাইনে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এই নিয়ে প্রশাসনের তরফে কোনও নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ। তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক হাইস্কুলের সামনে লম্বা লাইনে অভিভাবকদের সঙ্গে পড়ুয়াদেরও দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। কাছেই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

পঞ্চায়েতপ্রধান শরৎ মেট্যার অবশ্য দাবি, ‘‘সকালে স্কুলের গেট খোলার আগে অভিভাবকদের কিছুটা ভিড় হলেও স্কুল খোলার পর নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চাল ও আলু বিলি করা হয়েছে। তবে পড়ুয়াদের আসতে বারণ করা হলেও অল্প সংখ্যক পড়ুয়া এসেছিল।’’

এ দিন সকাল দশটা নাগাদ স্কুলে যাওয়ার জন্য কাঁথিতে ক্যানাল পাড় এলাকায় অটো ধরতে গিয়েছিলেন এক শিক্ষক। তাঁর দাবি, ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করেও স্কুলে পৌঁছতে অটো মেলেনি। পরে এক যুবকের মোটরবাইকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে স্কুলে পৌঁছন ওই শিক্ষক এবং মিড-ডে মিলের চাল ও আলু পড়ুয়াদের বিতরণ করেন। শুধু গ্রামীণ এলাকায় নয়, সোমবার ১১৬ জাতীয় সড়কে গণপরিবহণ ব্যবস্থা একেবারে ছিল না বললেই চলে। যে কারণে কাঁথি থেকে দূরবর্তী এলাকায় স্কুলে পৌঁছতে বিপাকে পড়তে হয়েছে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। রাজ্য সরকারের নির্দেশ, সোমবার বিকেলের মধ্যে সমস্ত পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল প্রকল্পে চাল এবং আলু পৌঁছে দিতে হবে। কিন্তু এ দিন কার্যত তা করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হল বহু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘জেলার প্রায় সমস্ত স্কুলেই এদিন চাল ও আলু বিলির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এনিয়ে কোথাও অভিযোগ আসেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Mid Day Meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE