কালেক্টরেটে এক কর্মীর হাতে সাংসদ তহবিলের বরাদ্দের অনুমোদনপত্র তুলে দিচ্ছেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
তিনি জনপ্রতিনিধি। ফলে তাঁর দায়িত্ব কিছুটা বেশিই। কিন্তু এই করনা সঙ্কটের আবহেও ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম মানুষের সাহায্য করতে গিয়ে কার্যত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠল। দিল্লি থেকে ফিরেও চিকিৎসকের নির্দেশমতো গৃহ পর্যবেক্ষণের না থেকে তিনি বিপদ বাড়াচ্ছেন বলেই অভিযোগ।
জেলায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নিজের ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন কুনার। মঙ্গলবার সাংসদ নিজেই জেলাশাসকের কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে গিয়ে জেলা প্রশাসনের আপৎকালীন ত্রাণ তহবিলের জন্য ওই টাকা বরাদ্দের অনুমোদনপত্র জমা দিয়ে আসেন। অথব সোমবার রাতেই দিল্লি থেকে ফিরেছেন তিনি। তার আগে শনিবার দিল্লি থেকে ঝাড়্গ্রাম ফিরেছিলেন সাংসদ। শনিবারই জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পরীক্ষাও করিয়েছিলেন সাংসদ। চিকিৎসক তাঁকে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার ফের সাংসদ দিল্লি চলে যান। সোমবার রাতে ফেরেন।
জেলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘এই সময় সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সাংসদ মেল করেও তো বরাদ্দপত্র পাঠাতে পারতেন। জনপ্রতিনিধি যদি দায়িত্বশীল না হন, তাহলে নাগরিকদের আমরা কী শেখাব!’’
খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা। তারপরেও নিয়মভঙ্গ কেন? বিজেপি সাংসদ কুনার বলেন, ‘‘দিল্লি ও দমদম বিমানবন্দরে আমার দু’বার শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। সোমবার রাতে ফিরেছি। জরুরি ভিত্তিতে যাতে বরাদ্দ টাকা প্রশাসন খরচ করতে উদ্যোগী হয়, সেজন্য এদিন নিজে বলতে গিয়েছিলাম।’’ কিন্তু ভিন্ রাজ্য থেকে এলে এই সময় তো ১৪দিন বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা? কুনারের জবাব, ‘‘সব সাংসদই নিজের এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তবে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনেই আমি সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাকে কোয়ারান্টিনে থাকার কথা চিকিৎসক বলেননি।’’
ঝাড়গ্রামের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা অবশ্য স্পষ্ট বলেন, ‘‘সরকারি নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী বিদেশ অথবা ভিন্ রাজ্য থেকে যিনিই আসুন তাঁকে ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। তাছাড়া এখন শহর ‘লকডাউন’ আছে।’’ কুনারের দাবি, সেই বিশেষ প্রয়োজনেই এ দিন বেরিয়েছিলেন তিনি। সাংসদ বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটিতে মাস্ক নেই, বিশেষ পোশাক নেই। আমি নিজে গিয়ে ১৮০টা মাস্ক দিয়ে এসেছি।’’ তবে এখন তিনি বাড়িতে থাকবেন বলেই জানিয়েছেন।
সাংসদ হওয়ার পরে গত প্রায় এক বছরে জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ৫ কোটি টাকার পরিকল্পনা-প্রস্তাব জমা দিয়েছেন কুনার। তবে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিলে এই প্রথমবার বরাদ্দ দিলেন সাংসদ। এ দিন জেলাশাসকের কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমটি কেবল খোলা ছিল। সেখানে এক মহিলা কর্মীর হাতে বরাদ্দের অনুমোদনপত্রটি তুলে দেন সাংসদ।
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘সাংসদের বরাদ্দপত্র পেয়েছি। নির্দেশিকা মেনে ওই টাকা কী ভাবে ওই টাকা খরচ করা যাবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy