ক্ষীরপাইয়ে স্প্রে করা হচ্ছে জীবাণুনাশক। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
চিকিৎসার জন্য কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ক্ষীরপাইয়ের এক বৃদ্ধকে। সন্দেহ হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁর করোনা পরীক্ষা সিদ্ধান্ত নিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিপোর্ট এল পজ়িটিভ।
বৃদ্ধের বড় ছেলে পুরসভার কর্মী। ছোট ছেলে পুলিশকর্মী। কলকাতায় কর্মরত। আক্রান্তের বড় ছেলের সূত্রে ক্ষীরপাইয়ের পুরপ্রধান দুর্গাশঙ্কর পান, একাধিক কাউন্সিলর-সহ বেশ কয়েকজন পুর কর্মীকে হোম কোয়রান্টিনে (গৃহ পর্যবেক্ষণ) রাখা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ক্ষীরপাই পুর এলাকার এক বৃদ্ধের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। নিয়ম মেনে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।বুধবার আক্রান্তের পরিবার-সহ মোট ১৪ জনের করোনা পরীক্ষার জন্য লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে।’’ পুরপ্রধান বলেন, ‘‘নির্দেশ মেনে আমি হোম কোয়রান্টিনে রয়েছি। কয়েকজন কাউন্সিলর ও কর্মীকেও ঘরে পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে দিন কয়েক আগে মেদিনীপুরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৃদ্ধের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পর রাতেই তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ সূত্রের খবর, বাবার চিকিৎসার সূত্রে কলকাতায় যাতায়াত করছিলেন আক্রান্তের বড় ছেলে তথা ক্ষীরপাই পুরসভার ওই কর্মী। বৃদ্ধের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরই ক্ষীরপাই এলাকায় পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়। আক্রান্তের ছেলে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন,কারা কারা সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিলেন, তার সন্ধান চালায় পুলিশ।
পুরসভার ওই কর্মী ক্ষীরপাই টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য।লকডাউন মেনে চলতে ওই টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালাতেন।ফলে প্রাথমিক সতর্কতা হিসাবে পুরসভার চেয়ারম্যান- সহ একাধিক কর্মীকে হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়।টাস্ক ফোর্সের সদস্যদেরও বাড়িতে একান্তে বিশ্রাম নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আক্রান্তের বড় ছেলে- সহ পরিবারের বাকি সদস্যদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।আক্রান্তের ছোট ছেলে কলকাতায় কর্মরত।তাঁকে ও তাঁর পরিবারের চার সদস্যকেও হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতেই ক্ষীরপাই শহরের একটি নির্দিষ্ট ওয়ার্ড সিল করে দেয় পুলিশ। স্থানীয় রাস্তা এবং অলি-গলি পুলিশ ব্যারিকেড করে ঘিরে দেয়। এদিন সকালে পুরসভা, ক্ষীরপাই পুলিশ ফাঁড়ি সহ শহরের রাস্তাঘাটে দমকল কর্মীরা জীবাণু নাশক স্প্রে করেন।এ দিন সকালে আক্রান্তের পরিবার- সহ সরাসরি সংস্পর্শে আসা ১৪ জনকে করোনা পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সরকারি নির্দেশে মঙ্গলবার ক্ষীরপাই এলাকায় অল্প অল্প করে দোকানপাট খুলতে শুরু করেছিল। বুধবার অবশ্য ক্ষীরপাই এলাকার সমস্ত দোকান বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পুর বাসিন্দাদের সতর্ক করতে শহর জুড়েই পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy