Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Amphan

অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে আমপানের ক্ষতিপূরণ 

আমপান ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে রাজ্য জুড়ে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ০৫:২০
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কঠোর অবস্থান নিতেই ছবিটা বদলাতে শুরু করল। আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের সংশোধিত তালিকা তৈরি হচ্ছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলিয়েও ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছনো হচ্ছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘একটি এলাকার কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা ওঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। ওই অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকাও পৌঁছে দিয়েছি।’’

আমপান ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে রাজ্য জুড়ে। তুলনায় কম হলেও পশ্চিম মেদিনীপুরেও এমন অভিযোগ রয়েছে। ভাঙা বাড়ির টাকা বিলি নিয়েই অভিযোগ বেশি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও যাঁরা ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েছেন, তাঁদের টাকা ফেরানোর কথা জানানো হয়েছে।’’ অজিতের অভিযোগ, ‘‘বিজেপির পঞ্চায়েতগুলিও দুর্নীতি করেছে।’’

জানা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের সংশোধিত তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর স্পষ্ট করেছে, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদেরই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে জেলাশাসকের দফতরে এক অভিযোগ এসেছিল। জানা যায়, খড়্গপুর গ্রামীণের হরিয়াতাড়ায় এমন ১৬ জন গরিব মানুষ রয়েছেন, আমপানে যাঁদের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অথচ তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাননি। স্থানীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা তৈরি হয়েছিল, সেখানে তাঁদের নাম নেই। স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। তদন্তে দেখা যায়, অভিযোগ সঠিক। ওই ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্থানীয় প্রশাসনের দল। দেখা যায়, ১৬ জনেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই নেই। সকলেই দিনমজুর। ক্ষতিপূরণের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই পৌঁছয়। তাই তড়িঘড়ি ওই ১৬ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে দেয় প্রশাসন। ক্ষতিপূরণের টাকাও পৌঁছনো হয়েছে। ১৬ জনের কারও একশো দিনের কাজের জবকার্ডও নেই। জেলাশাসকের আশ্বাস, ‘‘ওঁদের জবকার্ড করে দেওয়া হচ্ছে।’’ ওই ১৬ জনের একজন বলছিলেন, ‘‘প্রশাসন পাশে দাঁড়ানোয় সুবিধে হল।’’

এই জেলায় ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরতের ঘটনাও ঘটেছে। গড়বেতা-৩ ব্লকের এক তৃণমূল প্রধান তাঁর স্ত্রীর নামে টাকা নিয়েছিলেন। দলের নির্দেশে তিনি টাকা প্রশাসনকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার জন বাড়ির ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। যাঁদের বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদেরই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। অথচ এই জেলাতেও দেখা গিয়েছে, যাঁর বাড়ির এক-আধটা টালি ভেঙেছে, তিনিও যেমন আবেদন করেছেন, তেমনই যাঁর পাকা দোতলা বাড়ির সামান্য ক্ষতি হয়েছে, তিনিও আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Scam Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE