মৃত পড়ুয়ার মাকে সামলানোর চেষ্টা। নিজস্ব চিত্র
সাঁকো থেকে পড়ে তলিয়ে যাওয়া ছাত্রের খোঁজ মিলল সোমবার।
এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ চন্দ্রকোনার ভগবন্তপুর ঘেঁষা চাষিবেড় এলাকায় কেঠে খালের সাঁকোর নিচে থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা জাহাঙ্গির শা-র দেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, জাহাঙ্গিরের দেহটি সাঁকোটির নিচের একটি কাঠে আটকে ছিল। পরিবারের আপত্তি থাকায় মৃত ছাত্রের ময়নাতদন্ত করা হয়নি।
বন্যপ্রবণ ঘাটাল মহকুমায় অনেকগুলি ছোট-বড় নদ-নদী ও খাল রয়েছে। সেগুলি পারাপারের জন্য রয়েছে কাঠ অথবা বাঁশের সাঁকো। যার বেশিরভাগ এমনিতেই দুর্বল। বর্ষাকালে জলের চাপে সেগুলি আরও নড়বড়ে হয়ে যায়। অনেক সাঁকো ভেসেও যায় এই সময়ে। স্থানীয়দের দাবি, কেঠে খালের ওপরের সাঁকোটি দুর্বল। তার দু’ধারের বাঁশগুলি ভাঙা। তার জেরেই অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রটি পড়ে যায়।
ছাত্রের দেহ উদ্ধারের পরে দুর্বল সাঁকোগুলি সারানো ও নদীতে নজরদারির দাবিতে সরব হয়েছেন ঘাটাল-চন্দ্রকোনার বাসিন্দারা। ভগবন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মনতোষ পালের ক্ষোভ, “এখন ভরা নদী। সাঁকোগুলিও নড়বড়ে। অথচ নজরদারির বালাই নেই।” ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকার অবশ্য জানান, ঘাটাল, দাসপুরে ৮-১০টি দুর্বল সাঁকো চিহ্নিত করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নৌকাঘাটগুলিতেও পুলিশের নজরদারি চলছে।
এ দিন অবশ্য ঘাটালে বৃষ্টি হয়নি। তবে গত দু’দিনে বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার বৃষ্টির জল ঘাটালের নদীতে এসে পড়ছে। ফলে শিলাবতী, কংসাবতী, রূপনারায়ণে জল বাড়ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার শিলাবতীতে এক ফুটের বেশি জল বেড়েছে। তবে মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়ার কোনও খবর এখনও নেই। দাসপুরের রাজনগর এলাকায় কাঁকি খালের জল উপচে বেশ কিছু জমিতে জল জমে গিয়েছে।
ঘাটাল মহকুমা সেচ আধিকারিক উত্তম হাজরা বলেন, “ঘাটালের নদী-খাল গুলিতে জল বাড়ছে। তবে সব নদীর জলই কমবেশি প্রাথমিক বিপদ সীমার নীচে রয়েছে।” সেচ দফতর জানিয়েছে, আরও দু’দিন বৃষ্টি হলে শিলাবতী-সহ নদীগুলিতে জল বাড়বে। গোয়ালতোড়ের জোগারডাঙায় কাঠের অস্থায়ী সাঁকোর উপর দিয়ে বড় ভারী গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গোয়ালতোড়ে তমাল নদী, পারাং খালে জল বেড়েছে। ঝাড়খণ্ডে ভারী বৃষ্টির জন্য সুবর্ণরেখার গালুডি জলাধার থেকে ১ লক্ষ ৯০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।
সোমবার থেকেই সুবর্ণরেখার জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন এ দিন থেকেই নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর-১, গোপীবল্লভপুর-২ ও সাঁকরাইল ব্লকের সুবর্ণরেখা তীরবর্তী এলাকাগুলিতে মাইকে প্রচার শুরু করা হয়েছে। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ওই সময় যাতে কেউ নদীতে স্নান করতে বা মাছ ধরতে না নামেন, সে জন্য বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy