Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
মেদিনীপুর মেডিক্যাল

দু’দিন পড়ে রোগী, হয়নি পরীক্ষা

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি বছর বাইশের এক যুবতী। কিন্তু দু’দিন পরেও তাঁর রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করে উঠতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২৩
Share: Save:

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি বছর বাইশের এক যুবতী। কিন্তু দু’দিন পরেও তাঁর রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করে উঠতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্বাভাবিক ভাবেই শুরু করা যায়নি চিকিৎসাও। বরং ওই যুবতীর পরিজনেদের অভিযোগ, কখন রক্ত পরীক্ষা করা হবে জানতে চাওয়ায় হাসপাতালের তরফে পরামর্শ দেওয়া হয় বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে নিতে। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল সুপার তন্ময় পাঁজার মন্তব্য, ‘‘এ রকম হওয়ার কথা নয়। দেখছি ঠিক কী হয়েছে!’’

শনিবার সকালে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হন সবংয়ের বাসিন্দা অপর্ণা জানা নামে ওই বধূ। তাঁর স্বামী সজল জানা বলেন, “বুধবার থেকেই জ্বর। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ময়নার একটি প্যাথ-ল্যাব থেকে রক্ত পরীক্ষা করিয়েছিলাম। সেখানেই দেখা যায় প্লেটলেট কম ১লক্ষ ৪০ হাজার হয়ে গিয়েছে।’’ কিন্তু তারপর ময়না থেকে আর সেই রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট আনতে যাওয়ার সময় হয়নি। জ্বর বাড়ায় শনিবারই স্ত্রীকে ভর্তি করেছিলেন মেডিক্যালে। ভেবেছিলেন সব এখানেই হয়ে যাবে। বেসরকারি সংস্থার ল্যবরেটারির থেকে বেশি ভরসা করেছিলেন মেডিক্যালের উপর। কিন্তু দু’দিন ধরে শুরু স্যালাইন দেওয়া হয়েছে অপর্ণাকে। দু’বেলা দু’জন চিকিৎসক দেখে গিয়েছেন। তাঁদেরই একজনকে রক্ত পরীক্ষার কথা বলেছিলেন সজলবাবু। চিকিৎসক সাফ বলেছেন, ‘‘রবিবার এখান থেকে রক্ত পরীক্ষা করা মুশকিল! পারলে বাইরের প্যাথলজি সেন্টার থেকে করিয়ে নিন!”

অপর্ণাদেবীর মতো অনেকেই সমস্যায় পড়েন। অভিযোগ মাঝেমধ্যেই বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কেন? সদুত্তর এড়িয়ে মেডিক্যালের এক কর্তা বলেন, “অনেক সময় রোগীর পরিজনেরাই বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে চান। তখন কিছু করার থাকে না।” কিন্তু অপর্ণার পরিবার তো তেমন চাননি? সদুত্তর মেলেনি।

বরং শোনা গিয়েছে যুক্তি। এখন অ্যালাইজা কিটের মাধ্যমেই ডেঙ্গির পরীক্ষা হয়। অভিযোগ, খরচ সাপেক্ষ ওই কিট ব্যবহারের ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটু বেশি সচেতন। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক রক্তের নমুনা না পাওয়া গেলে পরীক্ষা করতে চান না তাঁরা। অনেক রোগীর পরিবারই অভিযোগ করেছেন এ ধরনের মনোভাবকে নিয়ম করে ফেলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে রক্ত পরীক্ষা হতে পাঁচ-ছ’দিন লেগে যায়। দিন কয়েক আগেও মেডিক্যালে এসে হয়রান হন এক ডেঙ্গি আক্রান্ত। ভর্তির পরের দিন তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জ্বর না কমায় ফের তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

সেই আশঙ্কা করছেন অপর্ণার স্বামীও। সজলবাবুর কথায়, “ওর অবস্থা আরও খারাপ হলে কী হবে বুঝতে পারছি না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Midnapore Medical Dengue Patient negligence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE