হাতেকলমে: মহড়ায় ব্যস্ত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র
অন্য বছর এই সময় নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না। বন্যার জলে ঝুঁকি নিয়ে ছুটতে হয় এ প্রান্ত সে প্রান্ত।
এ বার ছবিটা আলাদা। দেরিতে বর্ষা এলেও বন্যার ভ্রূকুটি নেই। তাই স্কুলে স্কুলে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা।
ঘাটাল আর বন্যা একটা সময় সমার্থক ছিল। ফি বছর জুনে বিপর্যয় মোকবিলা বাহিনীর সদস্যরা তাই পৌঁছে যান পশ্চিম মেদিনীপুরের এই জনপদে। অক্টোবর পর্যন্ত থাকেন। বানভাসি এলাকায় উদ্ধারকাজ, পানীয় জল, খাবার পৌঁছে দেওয়া-সহ নানা দায়িত্ব পালন করেন তাঁরা। ঘাটাল মহকুমা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রের খবর, নিয়ম মেনে এ বারও গত জুনে ৩০ জনের দল ঘাটালে পৌঁছয়। বীরসিংহ গ্রামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বাংলোয় অস্থায়ী ভাবে তৈরি হয়েছে বাহিনীর আস্তানা। এ বার নদীগুলোতে জল বাড়লেও মহকুমার কোথাও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তাই সচেতনতামূলক শিবিরে ব্যস্ত রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
ক’দিন ধরেই ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে ঘুরছেন তাঁরা। পড়ুয়াদের বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভিডিয়ো দেখাচ্ছেন। এ সব ক্ষেত্রে কী করণীয়, কী ভাবে নিজের ও পরিবারের লোকজনের জীবন রক্ষা করা যায় সেই পাঠ দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে শুধু বন্যা নয়, ভূমিকম্প, সাইক্লোন, অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলার পাঠও দেওয়া হচ্ছে। পড়ুয়ারা যাতে বাড়ির লোক, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় ও পড়শিদের এ সব জানায়, তা-ও বলা হচ্ছে। ঘাটাল যেহেতু বন্যাপ্রবণ এলাকা, তাই বাড়তি গুরুত্ব থাকছে বন্যা মোকাবিলাতেই। বন্যার মরসুমে নিয়ম করে সবংবাদপত্র, টিভির খবরে চোখ রাখতে বলা হচ্ছে। জল বাড়লে নিরাপদ স্থানে উঠে যেতে হবে। তার আগে বাড়ির দলিল, বিভিন্ন শংসাপত্র, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে রাখতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ, দেশলাই, টর্চ। সর্পদষ্টের প্রাথমিক চিকিৎসার পাঠও দেওয়া হচ্ছে।
এমন শিবিরে উৎসাহ বাড়ছে পড়ুয়াদেরও। মহকুমা বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিক অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, “বিপর্যয় আসবেই। তার থেকে কী ভাবে রক্ষা পাওয়া যায় তারই খুঁটিনাটি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাহিনীর লোকজন স্কুলে মহড়া করেও দেখাচ্ছে। এতে আকৃষ্ট হচ্ছে পড়ুয়ারা।” বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক ইন্সপেক্টর রাজেশ যাদবের কথায়, “আমরা যা শিখেছি স্কুলের ছেলে-মেয়েদের সেই সব পরামর্শ, প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যুব সমাজকে সচেতন করতেই এই পদক্ষেপ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy