প্রতীকী ছবি।
এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্তের খোঁজ মিলতে থাকায় উদ্বেগে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মূলত মশা ও শুয়োর থেকেই এই রোগ ছড়ায়। যে সব এলাকায় এই রোগের প্রকোপ বেশি সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। চলতি বছরও নতুন করে দু’জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আক্রান্তেরা চিকিত্সাধীন। ওই দু’জন যে এলাকার বাসিন্দা সেই এলাকায় প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপও করা হয়েছে। এ বার শুরু হবে সচেতনতা শিবির। চলতি সপ্তাহ থেকেই চন্দ্রকোনা- ১, কেশপুর, কেশিয়াড়ি এবং নারায়ণগড়ে এই শিবির শুরু হওয়ার কথা। জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। সবস্তরে এই সচেতনতা গড়ে তোলা আবশ্যিক। স্বাস্থ্যকর্মীদেরও আরও সচেতন করা জরুরি। ব্লকস্তরে ওই শিবিরের ভাবনা সেখান থেকেই। যদিও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার দাবি, “জেলার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। যে এলাকায় আক্রান্তের খোঁজ মেলে, সেখানে প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ করা হয়। এর ফলে রোগ আর ছড়ায় না।”
ছোটদের জাপানি এনসেফ্যালাইটিস (জেই) টিকাকরণ পদ্ধতি ছিল। তবে ছিল না বয়স্কদের জন্য প্রতিষেধক। গত বছর থেকে তা-ও করা হচ্ছে জেলায়। জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরেও বয়স্কদের জেই টিকাকরণ শুরু হয়েছে। এরফলে, নিশ্চিত ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা কমবে।” জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “গত বছর যে সব জায়গা থেকে এইএস রোগীর খোঁজ মিলেছে, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সেখানে টিকাকরণের কাজ শুরু হয়নি। এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত রুখতে টিকাকরণে জোর দেওয়া হয়েছে। টিকাকরণের পরও রোগ সংক্রমণ হচ্ছে এমন কোনও তথ্য নেই।”
২০১৭ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোমে (এইএস) আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৪ জন। এরমধ্যে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে (জেই) আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬ জন। মৃত্যু হয়েছিল শঙ্করী বেরা নামে বছর বত্রিশের আশাকর্মীর। তাঁর খিঁচুনি- জ্বর হয়েছিল। জ্বর সারাতে ওই আশাকর্মী এক গুণিনের কাছে যান। বিষয়টি জানাজানি হতে শোরগোল পড়ে। পরে তাঁকে বুঝিয়ে- সুঝিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায়, আশাকর্মী জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে (জেই) আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন, “কোনও এলাকায় জেই আক্রান্তের খোঁজ মিললে সব দিক খতিয়ে দেখা জরুরি। কারণ, রোগ সংক্রমণের আরও আশঙ্কা থেকে যায়।” লাগাতার পর্যবেক্ষণ আর সচেতনতা শিবির— জোড়া ওষুধে এনসেফ্যালাইটিসের মোকাবিলা করা যাবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্যকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy