ভাঙা: বনদফতরের রূপারঘাগরা বিট অফিসের সেই দেওয়াল।
এ বার খোদ বন দফতরের অফিসেই হামলা চালাল এক দাঁতাল। শুক্রবার রাতে গোয়ালতোড়ের মাহালিসাই রেঞ্জের রূপারঘাগরা বিট অফিসের ইটের প্রাচীর ভেঙে দেয় একটি হাতি। জানা গিয়েছে, রাতে জামডহরার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে একটি হাতি বিট অফিসের সামনে এসে বেশ কিছুক্ষণ চিৎকার করে। তারপর শুঁড় দিয়ে দেওয়ালের প্রায় ৪০ মিটার মতো অংশ ভেঙে দিয়ে পাশের বাবলাপানির জঙ্গলে চলে যায়।
যদিও বনদফতরের মাহালিসাই রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ভজন কীর্তনীয়া জানিয়েছেন, ওই হাতিটি ছাড়া আর কোনও হাতি শুক্রবার রাতে বিট অফিসের আশপাশে আসেনি। তবে অন্যদিকে শনিবার ভোরে জঙ্গলে ছাতু তুলতে গিয়ে হাতির মুখে পড়ে পালাতে গিয়ে জখম হয়েছেম দুই যুবক। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের নয়াবসতের মঙ্গলপাড়ার বাসিন্দা বাপন সিংহ ও নিতাই সিংহ শনিবার ভোরে তিলাবুকার জঙ্গলে বনজ ছাতু সংগ্রহে গিয়েছিলেন। এই সময় একটি দাঁতালের সামনে পড়েন তাঁরা। জঙ্গলে সাইকেল ফেলে দৌড়ে পালাতে গিয়ে পড়ে জখম হন তাঁরা। আপাতত দু’জনই চিকিৎসাধীন। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে এই জঙ্গলেই বনজ ছাতু তুলতে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছিল এক মহিলার।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দ্রকোনা রোড ও গোয়ালতোড় ব্লক এলাকার জঙ্গল থেকে বেশিরভাগ হাতিকেই শুক্রবার রাতেই লালগড়ের জঙ্গলের দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতভর অভিযানে নেমে বনকর্মীরা হুলাপার্টির সাহায্যে দাঁতালদের লালগড়ের ঝিটকা, মধুপুর, বিনপুরের জঙ্গলে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ৬০-৭০টি হাতির এই বড় দলটি শালবনির পিড়াকাটা রেঞ্জ এলাকা থেকে চন্দ্রকোনা রোডের নয়াবসত রেঞ্জ এবং পরে গোয়ালতোড়ের মাহালিসাই রেঞ্জের জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছিল। পরে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা ধান জমিতে, আনাজ খেতে নেমে আসছিল।
শুধু নয়াবসত রেঞ্জেই হাতির হানায় ফসলহানি হয়েছে প্রায় ৬০ হেক্টর জমির। এই রেঞ্জের অফিসার সমীর বসু বলেন, ‘‘হাতির হানায় ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নিয়ে হিসাব করা হচ্ছে।’’ মাহালিসাই রেঞ্জ এলাকায় এই ক্ষতির পরিমাণটা ১৫ হেক্টরের মতো। ক্ষতি হয়েছে গোয়ালতোড় রেঞ্জ এলাকাতেও। এ ছাড়া কয়েকটি এলাকায় সেচের জন্য জলের পাম্প, শ্যালো ঘরেও ক্ষতি করেছে দাঁতালেরা। এখন ধান পাকার সময়, তা ছাড়া শীতকালীন ফসলেরও প্রস্তুতি চলছে। এমন অবস্থায় হাতিগুলি এলাকায় থেকে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ত। তাই বন দফতর তড়িঘড়ি তাদের ঝাড়গ্রামের দিকে পাঠাতে উদ্যোগী হয়। শুক্রবার রাতের অভিযানে বেশিরভাগ দাঁতালকেই লালগড়ের দিকে পাঠানো গিয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy