Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
পুলিশের অনুমতি ছাড়াই মেলা

গ্যাস বেলুনের সিলিন্ডার ফেটে জখম ৩

২০১৩ সালে হলদিয়ার দুর্গাচকে বইমেলায় গ্যাস বেলুনের সিলিন্ডার ফেটে একজন দোকানদার মারা যান। তারপর প্রশাসনিকভাবে মেলায় গ্যাস বেলুন বিক্রি কিংবা আগুন নিয়ে নান রকম খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৪
Share: Save:

কালীপুজো উপলক্ষে মেলা বসেছিল। সেখানেই সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হলেন তিন ব্যাক্তি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক যুবককে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। গ্যাস সিলিন্ডারের মালিক সহ আহত আর একজন জেলার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে এগরার ২ ব্লকের অস্তিচক বাজারে। মেলার জন্য পুলিশ–প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত রবিবার, কালীপুজোর দিন থেকে অস্তিচক বাজার কমিটির উদ্যোগে কালী পুজোয় মেলা বসেছে। এগরা ২ ব্লকের বাথুয়াড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন অস্তিচক বাজার কমিটি সাত দিনের এই মেলা বসিয়েছে। মঙ্গলবার ভাইফোঁটা উপলভে মেলায় ভিড়ও হয়েছিল। মূল পুজো মন্দির থেকে কিছুটা দূরে বাঁধের উপর মেলা বসে। অভিযোগ, বিধি না মেনেই মেলায় যত্রতত্র সিলিন্ডার বসিয়ে খাবার দোকানে রান্না চলছে। বসেছিল গ্যাস বেলুনের কারবার। প্রত্যক্ষদর্শীর জানান, ঘড়িতে তখন সওয়া রাত ১০টা। মেলায় যাত্রা চলছিল। তাই লোকজনও ভাল ছিল। অাচমকা একটা বিকট শব্দে গ্যাসবেলুনের সিলিন্ডার ফেটে যায়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে সিলিন্ডারটি কয়েক টুকরো হয়ে বেশ কিছুটা দূরে ছিটকে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে খবর অস্তিচক গ্রামের বছর তেইশের যুবক পল্টু মাইতি ঘটনাস্থলের কাছেই একটি দোকানের সামনে বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। সিলিন্ডারের ভাঙা ধারালো অংশের আঘাতে তার ডান পা গুরুতর জখম হয়। জখম হয় গ্যাসবেলুন বিক্রেতা সহ আরও একজন। ওই অবস্থাতেই তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে বাজার কমিটি সূত্রে খবর পেয়ে পলাতকদের একজন শিবশঙ্কর করণকে ভূপতিনগর থানার নাড়ুয়াভিলা গ্রাম থেকে আটক করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পল্টুকে প্রথমে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থায় অবনতি হলে তাঁকে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। শিবশঙ্কর কাঁথি মহকুমা চণ্ডীপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার চোখে লেগেছে।

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুলিশকে খবর দিলেও বুধবার দুপুর পর্যন্ত এলাকায় পুলিশ আসেনি। বিস্ফোরণের পরেএলাকায় আতঙ্ক তৈরি হলেও আগামী শনিবার পর্যন্ত মেলা চলবে বলে জানিয়েছে কমিটি। প্রশ্ন উঠছে অনুমতি না নিয়ে চলা মেলায় এ ভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের বিপজ্জনক ব্যবহারে দুর্ঘটনর দায় কার? এ বিষয়ে মেলা কমিটির এক সদস্য জানান, পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়নি ঠিকই। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুমতি রয়েছে। তবে মেলায় এই ধরনের ব্যবসার কথা তারা জানতেন না। এটা বেআইনি কি না তাও তাদের জানা নেই।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে হলদিয়ার দুর্গাচকে বইমেলায় গ্যাস বেলুনের সিলিন্ডার ফেটে একজন দোকানদার মারা যান। তারপর প্রশাসনিকভাবে মেলায় গ্যাস বেলুন বিক্রি কিংবা আগুন নিয়ে নান রকম খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপরেও প্রশাসনের নজর এড়িয়ে যে এ সব অবাধে চলছে, মঙ্গলবার রাতে এগরার ঘটনাই তার প্রমাণ। এগরা থানার পুলিশ জানিয়েছে, অস্তিচকে মেলায় জন্য তাদের কাছে অনুমতি নেওয়া হয়নি। মেলায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একজন আহত বলে তারা জানতে পেরেছে। এগরার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শেখ আকতার আলি বলেন, ‘‘গ্রামে পুজোকে কেন্দ্র করে কয়েকটি ছোট ছোট দোকান বসেছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে এর জন্য কেন অনুমতি নেওয়া হয়নি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

অস্তিচক বাজার কমিটির সম্পাদক রঞ্জন গিরি বলেন, ‘‘মেলা বসানোর জন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তবে মেলায় গ্যাস সিলিন্ডার এনে বেলুন বিক্রির বি‌ষয়টি আমরা জানতাম না। সিলিন্ডার মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Gas balloon Book Fair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE