Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Jhargram

হাতি তাড়াতে জ্বলন্ত পটকা, বাড়ছে উদ্বেগ

উত্যক্ত: তাড়ানোর নামে হাতিকে কষ্ট দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে ।

উত্যক্ত: তাড়ানোর নামে হাতিকে কষ্ট দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৩:২২
Share: Save:

খেদানোর সময়ে দাঁতালকে লক্ষ করে ছোড়া হচ্ছে জ্বলন্ত পটকা। সাধারণ মানুষের একাংশের এমন প্রবণতায় বেড়ে চলেছে বন্যপ্রাণ ও মানুষের মধ্যে সংঘাত। অবিলম্বে এমন প্রবণতায় রাশ না টানলে আগামী দিনে সমস্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বন বিশেষজ্ঞরা।

বন দফতর জানাচ্ছে, খেদানোর সময়ে হাতিকে কষ্ট দেওয়া হলে সেই হাতিটি আগামী দিনে বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে। চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম জেলায় হাতির হানায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট আট জন। সংখ্যাটা যথেষ্ট উদ্বেগের বলেই মনে করছেন প্রাক্তন বনকর্তা সমীর মজুমদার। তিনি বলছেন, ‘‘কেরলের ঘটনার পরেও মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। বন্যপ্রাণীকে কষ্ট দেওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণ আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।’’ সমীর মজুমদারের ব্যাখ্যা, জঙ্গলে খাবারের সঙ্কটের কারণেই হাতিরা লোকালয়মুখী। কিন্তু মাঠের ফসল, কিংবা গৃহস্থের বাড়িতে মজুত ধান-চালে ভাগ বসাতে গেলেও এখন হাতিদের মানুষের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে। সেই কারণে কখনও রাস্তায় যানবাহন থামিয়ে খাবার খাচ্ছে হাতি।

কিন্তু খেদানোর সময়ে অতি উৎসাহী একাংশ গ্রামবাসী কখনও হাতির লেজ মুচড়ে দিচ্ছেন, কখনও জ্বলন্ত পটকা ছুড়ে দিচ্ছেন, কখনও আবার হুলার (মশাল) ছ্যাঁকাও দিচ্ছেন। এর ফলে হাতিরাও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে।

কয়েকদিন আগেই ঝাড়গ্রাম শহরের কাছেই দিনে-দুপুরে সদ্য রোয়া ধানের জমিতে নেমে পড়েছিল একটি রেসিডেন্ট হাতি। ধান বাঁচাতে স্থানীয়রা হই-হট্টগোল শুরু করলেও, হাতিটি জমি ছেড়ে নড়ছিল না। শেষ পর্যন্ত এক যুবক জ্বলন্ত পটকা ছুড়ে মারলেন হাতির কান লক্ষ করে। কান ছুঁয়ে জোরাল শব্দে পটকা ফাটতে নড়েচড়ে উঠল হাতিটি। এমন দৃশ্য দেখে অস্বস্তিতে পড়েন বনকর্মীরাও। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে হাতি খেদানোর ওই ভিডিয়ো (ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে বনকর্মীদের। বনকর্মীদের একাংশের দাবি, ভিডিয়োটি হাতিদের শারীরিক ভাবে কষ্ট দেওয়ার দাবিকেই মান্যতা দিচ্ছে।

হাতি খেদানোর জন্য স্থানীয় গ্রামবাসীদের নিয়ে বন বিভাগের হুলা পার্টি রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার তিনটি ফরেস্ট ডিভিশনের (তিনটি বন বিভাগের) অধীনে ১২টি হুলাপার্টি রয়েছে। হাতি খেদানোর জন্য দৈনিক মজুরিও দেওয়া হয় হুলাপার্টির সদস্যদের। তবে অনেক ক্ষেত্রে আচমকা হাতি লোকালয়ে ঢুকে পড়লে চটজলদি গ্রামবাসীরাই হাতি খেদাতে শুরু করেন। গ্রামবাসীর অভিযোগ, সময় মতো বনকর্মী ও হুলাপার্টির লোকজন এসে পৌঁছন না। সেই কারণেই পটকা ফাটাতে হয়। ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, ‘‘খেদানোর সময়ে হাতিকে শারীরিক কষ্ট দিলে হিতে-বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ সব বন্যপ্রাণ আইনেরও বিরোধী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram Elephant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE