প্রতীকী ছবি।
আসন্ন পুর নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে দু’টি সমীক্ষার রিপোর্টের প্রেক্ষিতে প্রার্থী বাছাইয়ের কথা আগেই বলা হয়েছে। তবে প্রার্থী বাছাইয়ের আগেই তৃণমূলের অন্দরে দেখা দিচ্ছে ক্ষোভ। সমাজ মাধ্যমেও ধরা পড়ছে সেই ক্ষোভের সুর।
রেলশহরে গত কয়েকদিন ধরেই তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকী সমাজ মাধ্যমকে ব্যবহার করেও ক্ষোভের প্রকাশ করছেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। অধিকাংশই তুলে ধরছেন পুরনো কর্মীদের বঞ্চনার কথা। এমনকী পাঁচ বছর ধরে ওয়ার্ডে দলের হয়ে কাজ করলেও ভোটের সময় সুযোগ সন্ধানীদের নামই ঘোরাফেরা করছে বলেও মন্তব্য করছেন একাংশ তৃণমূল কর্মী।
‘সাজানো বাগানে ক্ষীর’ খাওয়ার মতো তির্যক মন্তব্যের দেখা মিলছে ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টে। আবার নেতাই গণহত্যার লাশ উদ্ধার করা কর্মী ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচিতে ডাক পান না বলেও সরব হতে দেখা যাচ্ছে কর্মীদের। গত পুরসভা নির্বাচনের পর পুলিশ-মাফিয়া যোগে পুরবোর্ড গঠনের অভিযোগ নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন একাংশ তৃণমূল কর্মী। তারপর বিধানসভা, লোকসভা, বিধানসভা উপ-নির্বাচনে দলের প্রার্থী বাছাই ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের একাংশকে। এবার পুরসভা নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের আগে থেকেই ক্ষোভের আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে সমাজ মাধ্যমে। শহরের খরিদার বাসিন্দা তৃণমূলের এক কর্মী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘পাঁচ বছরে যে মানুষটা ওয়ার্ডে দলের কাজ করেন, তাঁর নাম ভোটের প্রার্থী হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। ভোট আসলে ধান্দাবাজগুলোর নাম উঠে আসে’। আবার মালঞ্চর বাসিন্দা এক তৃণমূল কর্মী লিখেছেন, ‘আর কতদিন পুরনোরা বঞ্চিত থাকবে’? আবার তালবাগিচার বাসিন্দা প্রলয় ঘোষ নামে এক যুব তৃণমূল নেতা লিখেছেন, ‘সম্মানের সাথে থাকতে চাই। অসম্মানিত হতে নারাজ। ক্ষমতা প্রদর্শন সময়ে হবে’। কেন এসব মন্তব্য? প্রলয় ঘোষ ওরফে গুড্ডু নামে ওই যুব তৃণমূল নেতা বলেন, “আমরা তো দলের পুরনো কর্মী। আমাদের মনে হচ্ছে কোথাও পুরনো কর্মীদের সেই সম্মান দেওয়া হচ্ছে না।’’
বছর দেড়েক আগে সমাজ মাধ্যমে দলবিরোধী মন্তব্য করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তবে সেই নির্দেশ কাজে লাগেনি। এবার ফের এই ক্ষোভে প্রকাশ্যে আসায় বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “কে কোথায় কী পোস্ট করেছে জানি না। তবে আমার নজরে এলে আমি ওঁদের নিয়ে আলোচনায় বসব।” শহরের পুরনো তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “দল বারবার বলছে পুরনো কর্মীদের সঙ্গে বসতে হবে। দিদি নিজেও নির্দেশ দিয়েছেন। এখন যাঁরা এমন ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে ক্ষোভ মেটাতে হবে।” যদিও বিষয়টি নিয়ে শহরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার বলেন, “নতুন-পুরনো ব্যাপার নয়। যাঁরা যোগ্য তাঁরা নিশ্চয় সম্মান পাবেন। আর যাঁরা সমাজ মাধ্যমে এ ধরনের মন্তব্য করছেন, তাঁরা প্রকৃত তৃণমূল কর্মী আমি মনে করি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy