Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিধানসভার ‘ভুল’ আর নয়, তৎপর তৃণমূল   

কোন্দল সামাল দিতে ব্লক নির্বাচনী কমিটি গড়ে ভারসাম্য রক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০৪:৪৫
Share: Save:

শক্ত ঘাঁটি শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে বছর তিনেক আগের বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী নির্বেদ রায়। কারণ হিসাবে উঠে উঠে এসেছিল শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের তত্ত্ব। গত বছর পঞ্চায়েতেও সামনে এসেছিল সেই গোষ্ঠী কোন্দলেরই চিত্র। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাই সতর্ক তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। কোন্দল সামাল দিতে ব্লক নির্বাচনী কমিটি গড়ে ভারসাম্য রক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।

তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটে বামফ্রন্ট প্রার্থী অশোক দিন্দার কাছে হেরেছিলেন নির্বেদ রায়। বিধানসভা এলাকার মধ্যে থাকা তমলুক পুর এলাকায় নির্বেদবাবু এগিয়ে থাকলেও শহিদ মাতঙ্গিনী পিছিয়ে ছিলেন। অথচ, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতই তৃণমূল দখলে ছিল। নির্বেদ রায়ের মত একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হেরে যাওয়ায় অসস্তিতে পড়েছিলেন দলের জেলা নেতৃত্ব।

হারার কারণের কাটাছেড়ায় সামনে আসে ব্লকের তৃণমূল নেতা দিবাকর জানা, উত্তম সাহুদের সঙ্গে শরৎ মেট্যা, জয়দেব বর্মণদের কোন্দলের জেরেই তমলুক বিধানসভায় নির্বেদের পরাজয় হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা নেতৃত্ব দুই শিবিরের নেতা উত্তম এবং শরৎ মেট্যাকে তৃণমূলের ব্লক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করেছিল। যার জেরে গত লোকসভা উপ-নির্বাচনে ফের তমলুক বিধানসভায় সাড়ে ২৯ হাজার ভোট ‘লিড’ পান তৃণমূলের প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী।

কিন্তু গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লকে ফের সামনে আসে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দর। পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সহ-সভাপতি বামদেব গুছাইত টিকিট পাননি। তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী সাহু গুছাইত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থীর টিকিটে জয়ী হলেও কোনও পদ দেওয়া হয়নি। বামদেব শরৎ মেট্যা গোষ্ঠী ঘেঁষা বলে পরিচিত। সম্প্রতি বামদেবের নিয়ন্ত্রনাধীন হুড়িনান সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির অফিসে তালা মারার অভিযোগ ওঠে দলেরই খারুই-২ পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান দীনেশ করের বিরুদ্ধে। দীনেশ আবার উত্তম গোষ্ঠীর লোক বলে এলাকায় পরিচিত।

এই পরিস্থিতিতে নির্বিঘ্নে লোকসভা ভোট সম্পূর্ণ করতে ব্লক নির্বাচনী কমিটি গড়া হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ব্লক ও অঞ্চল নেতাদের নিয়ে ১৯ জনের নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন শরৎ মেট্যা ও উত্তম সাহু। কমিটিতে রয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা, জেলা পরিষদের সদস্য তনুশ্রী জানা, মামণি জানা, রাখি আদক, শান্তিপুর-১ পঞ্চায়েতের সেলিম আলি, পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য সরবরাহ কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মণ, পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহ-সভাপতি বামদেব গুছাইত এবং ধলহরা গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য দীনেশ নন্দ প্রমুখ।

ব্লক নির্বাচনী প্রচার কমিটির চেয়ারাম্যান করা হয়েছে বামদেব গুছাইতকে। দলীয় সূত্রের খবর, এবারের ভোটে ব্লক থেকে তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারীকে তিরিশ হাজার ভোট ‘লিড’ দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। শরৎ মেট্যা অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকে দলে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবেই লড়াই করার জন্য নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়েছে।’’

শহিদ মাতঙ্গিনীর মতোই ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের ইব্রাহিম আলির কাছে হেরেছিলেন তৃণমূলের বিপ্লব রায়চৌধুরী। তাতেও শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলকে দায়ী করেছিলেন নেতৃত্ব। সেখানে সামনে আসে তৃণমূলের কোলাঘাট ব্লক সভাপতি মদনমোহন মিশ্র, বিপ্লব রায়চৌধুরীর সঙ্গে অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন্দলের চিত্র। এবার ওই দ্বন্দ্বে রাশ টানতে দুই প্রতিপক্ষ মদনমোহন এবং অসিতকে কোলাঘাট ব্লক নির্বাচনী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করেছে দল। আগামিকাল, বুধবার লোকসভা নির্বাচনের জন্য কোলাঘাট ব্লক নির্বাচনী কমিটির প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 TMC Assembly Election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE