দেবদাস কুণ্ডুর মৃত্যুর পর আরপিএফ-এর শাস্তির দাবিতে মৌন মিছিল। —ফাইল চিত্র
যুবক খুনের মামলায় মূল অভিযুক্তকে আরপিএফের সাব-ইন্সপেক্টরকে বুধবার গ্রেফতার করল রেল পুলিশ।
ঝাড়গ্রাম রেল পুলিশের দাবি, দেবদাস কুণ্ডু হত্যা মামলায় মূল অভিযুক্ত আরপিএফের সাব-ইন্সপেক্টর প্রবীণ কুমার নিজে এ দিন সকালে ঝাড়গ্রাম জিআরপি থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁকে গ্রেফতার করে এদিনই ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। তদন্তের স্বার্থে প্রবীণকে পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে জিআরপি। বিচারক অবশ্য অভিযুক্তকে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
গত ২৪ জুন ঝাড়গ্রাম স্টেশনে প্রস্রাব করার অভিযোগে খড়গপুরের দেবদাসকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ ওঠে ঝাড়গ্রাম আরপিএফের বিরুদ্ধে। তার পরে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে দেবদাসকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই যুবকের চিকিৎসা চলাকালীন গত ২ জুলাই ঝাড়গ্রাম জিআরপি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন দেবদাসের জামাইবাবু শ্যামল কুণ্ডু। যদিও তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তবে গত ২৯ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেবদাসের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে দেবদাসের পরিবার। পর দিন ফের ঝাড়গ্রামে গিয়ে আরপিএফ পোস্ট ও জিআরপি থানায় বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয়েরা।
এর পরে বাড়িতে দেহ পৌঁছলে দেবদাসকে পিটিয়ে খুনে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে মৃতদেহ নিয়ে খড়্গপুরে ডিআরএম বাংলো ঘেরাও করেন মৃতের পরিজন ও পড়শিরা। উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থার আশ্বাসে মৃতদেহের সৎকার হয়। প্রাথমিকভাবে পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে জিআরপি। দেবদাসের মৃত্যুর পরে জিআরপি-র আবেদনের ভিত্তিতে মামলায় জামিন অযোগ্য অনিচ্ছাকৃত খুনের(৩০৪) ধারাটি যুক্ত করার অনুমতি দেয় আদালত।
জিআরপি তদন্ত করে চার জন অভিযুক্ত আরপিএফ কর্মীর নাম পায়। মূল অভিযুক্ত প্রবীণ ছাড়াও বাকি অভিযুক্তেরা হলেন ঝাড়গ্রাম আরপিএফ থানার তৎকালীন ওসি দেবেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ, সাব ইন্সপেক্টর ধনপাল সিংহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর সরবজিৎ কুমার।
ঝাড়গ্রাম জিআরপি থানার ওসি শেখ রবিউদ্দিন বলেন, ‘‘তদন্ত করে ঘটনায় চার জন আরপিএফের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। মূল অভিযুক্ত এ দিন থানায় আত্মসমর্পণ করায় তাঁকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হয়। বাকি তিন অভিযুক্ত পলাতক।’’ মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরে মৃত দেবদাসের বাবা শান্তি কুণ্ডু বলেন, “মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ায় স্বস্তি পেলাম। তবে আমার ছেলেকে যাঁরা খুন করেছে আরপিএফের বাকি তিনজনেরও কঠোর শাস্তি চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy