শিশির অধিকারী। —ফাইল চিত্র
জনগণকে পরিষেবা দেওয়াটা কার্যত ‘ব্যবসা’য় পরিণত করেছেন শাসকদল তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা— এমন অভিযোগ হামেশাই ওঠে। এ বার সেই অভিযোগে কার্যত সিলমোহর দিলেন দলের প্রবীণ সাংসদ তথা পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী। ওই ‘ব্যবসা’ বন্ধের হুঁশিয়ারিও দিলেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মারিশদায় কাঁথি-৩ ব্লকের পাট্টা বিলির অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে ছিলেন এলাকার সাংসদ শিশির। ওই মঞ্চেই প্রবীণ তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে অনেকেই লোভী রয়েছেন, যাঁরা সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের শংসাপত্র নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তাঁদের ব্যবসা বন্ধ করে দেব। তার জন্য যত দূর যেতে হয় যাব।’’
রাজনৈতিক মহলের একাংশ জানাচ্ছেন, শাসকদলের নেতারা বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি পদের শংসাপত্র নিয়ে পরে সরকারি প্রকল্পে যে আর্থিক দুর্নীতি করেন, এখানে তাকেই ‘ব্যবসা’ বলে বোঝাতে চেয়েছেন জেলা সভাপতি। শুক্রবার শিশির আরও বলেন, ‘‘বাঙালি বরাবর সত্যনিষ্ঠ। কিন্তু এখন সকলেই প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তাই ন্যায় এবং সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য সকলের সহযোগিতা চাই। অনেক হয়েছে, আর নয়। সরকারি কর্মচারী এবং জনপ্রতিনিধিদের স্বচ্ছ ভাবে কাজ করতে হবে।’’
শাসকদলের প্রবীণ সাংসদের এই মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক মহলে। শিশিরের ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ফের সরব হয়েছেন বাম-বিজেপি নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওঁর বক্তব্য বিড়াল বলে মাছ ছুঁই না প্রবাদের মতো। তৃণমূলের আমলে যা কিছু হয়েছে, সবই দুর্নীতি। এখন এসব বলে লাভ হবে না।’’ আরও এক ধাপ এগিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে সিপিএম। দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘আগে গোটা জেলার কাটমানি একটা পরিবারের হাতে যেত। কিন্তু এখন শাসকদলের জন প্রতিনিধিরা নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী পকেটে পুরে নিচ্ছে। তাই এ সব কথা বলা হচ্ছে।’’
বিরোধীদের সব কটাক্ষ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির শনিবার বলেন, ‘‘দুর্নীতিমুক্ত শাসন প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের দলের গোড়া থেকে লক্ষ্য। তাই দুর্নীতি নিয়ে যখন যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি, দলীয়ভাবে পদক্ষেপ করা হয়েছে। শুক্রবারের অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মচারী ও দলের জন প্রতিনিধিদের স্বচ্ছভাবে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম পরিচালনার কথাই বলেছি।’’ জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডারও একই দাবি। তিনি বলেন, ‘‘সাংসদ হিসাবে সকলকে সৎ ভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন উনি। এটা নিয়ে বিরোধীরা অপপ্রচার করছে।’’
ঝুলন্ত দেহ
ভগবানপুর: বাড়ি থেকে উদ্ধার হল এক প্রৌঢ়ের মৃতদেহ। মৃতের নাম রবীন্দ্রনাথ প্রধান (৫২)। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ভগবানপুর থানার বরুরভেড়ি গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। গত কাল রাতে বাড়ির ভিতর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। শনিবার সকালে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy