প্রতীকী চিত্র।
পড়াশোনায় এগিয়ে জঙ্গলমহলের মেয়েরা। ২০২০ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান অন্তত তেমনই বলছে।
ঝাড়গ্রাম জেলায় ২০২০ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ১৩,৯৭৬ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রী ৭,৫৯২ জন আর ছাত্র ৬,৩৮৪। জেলার মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক তপনকুমার পাত্র বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এবার সার্বিক ভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হাজার খানেক কমেছে। তবে এবারও জেলায় এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। এ বারও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা বেশি।’’
তপনের দাবি, কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুফল এটা। সর্বস্তরে সুফলটা পৌঁছেছে। এখন মেয়েদের লেখাপড়া শেখালে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আর্থিক সাহায্য মিলছে। একাংশ অভিভাবক কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী হলেও তাঁরা কিন্তু এখন মেয়েদের উচ্চশিক্ষিত করতে চাইছেন। এটাই প্রকল্পের সদর্থক দিক।
মাধ্যমিকের হিসেব
পরীক্ষার্থী ১৩,৯৭৬ ছাত্র ৬,৩৮৪ ছাত্রী ৭,৫৯২
(পরিসংখ্যান ঝাড়গ্রাম জেলার)
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ঝাড়গ্রাম জেলায় ৪০,২৮৭ জন ছাত্রীকে কন্যাশ্রী প্রকল্পে ১৬ কোটি ৪৫ লক্ষ ১১ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘কন্যাশ্রী কে-ওয়ান’ প্রকল্পে তেরো বছর থেকে আঠারো বছর পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীরা বছরে এক হাজার টাকা বৃত্তি পায়। আঠারো বছরের ঊর্ধ্বে দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ কন্যাশ্রীরা কে-টু প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে ওই কন্যাশ্রীকে অবিবাহিত থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে এককালীন ২৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এরপরে স্নাতকোত্তর স্তরে কন্যাশ্রীরা কে-থ্রি প্রকল্পে প্রতি মাসে আর্থিক অনুদান মেলে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৮-১৯ বর্ষে জেলায় ‘কে-ওয়ান’ কন্যাশ্রীর সংখ্যা ৩৫,১১১ জন। ‘কে-টু’ কন্যাশ্রীর সংখ্যা ৫,১৭৬ জন। এখনও পর্যন্ত জেলার ৪১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪০,২৮৭ জন কন্যাশ্রীকে ১৬ কোটি ৪৫ লক্ষ ১১ হাজার টাকা স্টাইপেন্ড বাবদ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফলে মেয়েদের পড়াশোনায় এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন অভিভাবকরা। রাজ্য থেকে কন্যাশ্রীর যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল, তার থেকেও জেলায় বেশি সংখ্যক মেয়েদের এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে জেলাশাসক মানছেন, ‘সবুজ সাথী’র সাইকেলের জন্য প্রত্যন্ত এলাকার মেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে। এখন মেয়েদের স্কুল ছুটের সংখ্যাটা এক শতাংশের নিচে রয়েছে। স্কুলছুটদের নতুন করে স্কুলে ভর্তির কর্মসূচিও জেলায় শুরু হয়েছে।
বেলপাহাড়ির এক অভিভাবক অনিল হাঁসদা বলেন, ‘‘বছর আটেক আগে বড় মেয়েকে স্কুল ছাড়িয়ে কম বয়সে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু বাকি দুই মেয়েকে পড়াচ্ছি। কন্যাশ্রী প্রকল্পে মেয়েরা আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে। কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে আরও বেশি সাহায্য পাবে। তাই মেয়েদের উচ্চশিক্ষিত করে তবেই বিয়ে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy