Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাতের আগুনে ছাই ঝুপড়ি, তিনজনের মৃত্যু

সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে যান ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকার-সহ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা। কী ভাবে আগুন লাগল তা জানতে খবর দেওয়া হয়েছে ফরেন্সিক টিমকে।

তছনছ গেরস্থালি। কিসমত কোতুলপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

তছনছ গেরস্থালি। কিসমত কোতুলপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:৪৯
Share: Save:

গভীর রাতে আগুন লাগল বাঁশ-দরমার ঘরে। পুড়ে মৃত্যু হল দুই মহিলা-সহ তিনজনের।

রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাল থানার কিসমত কোতুলপুরে। পুলিশ সূত্রের খবর, তিনটি দেহই একশো শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় শনাক্তকরণে সমস্যা হয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃতদের মধ্যে সন্তোষ দাস (৩৫) ও সুন্দরী মুর্মু (২৩) স্বামী-স্ত্রী ছিলেন। সন্তোষের বাড়ি ঘাটাল থানার জলসরায়। আর সুন্দরীর বাপের বাড়ি ঘাটাল থানারই মারিচ্যায়। আরেক মৃতের নাম শ্রীমতি মান্ডি (৩২)। তাঁর বাড়ি হুগলি জেলার গোঘাট থানার তারাহাট গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, সন্তোষের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন সুন্দরী।

সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে যান ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকার-সহ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা। কী ভাবে আগুন লাগল তা জানতে খবর দেওয়া হয়েছে ফরেন্সিক টিমকে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। সঠিক পরিচয় জানতে ডিএনএ পরীক্ষার বন্দোবস্তও করছে পুলিশ। ঘাটালের এসডিপিও বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে বাড়িতে কোনও ভাবে আগুন লেগেছিল। তাতেই পুড়ে মারা গিয়েছেন তিনজন। একজন অক্ষত রয়েছেন। তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি লম্ফ উদ্ধার করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মজুরির কাজ করে কয়েক মাস আগেই স্ত্রী শ্রীমতি মান্ডিকে নিয়ে ঘাটালে এসেছিলেন গণেশ মান্ডি। গণেশের দ্বিতীয় স্ত্রী শ্রীমতি। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি কিসমত কোতুলপুর গ্রামে বাদল পণ্ডিত নামে এক ব্যক্তির পুকুর পাড়ে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে থাকতেন। আর ঘাটালের শ্যাওড়াগেড়িয়া গ্রামে থাকতেন সন্তোষ ও সুন্দরী। ঘটনার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, দিন মজুরির সুবাদেই সন্তোষের সঙ্গে গণেশের আলাপ হয়। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁরা কাজ সেরে একসঙ্গে বসে মদ্যপান করেছিলেন। তারপর সন্তোষরা আর বাড়ি ফেরেননি। গণেশের ঘরেই ঘুমিয়ে পড়েন।

রাত বারোটা নাগাদ গণেশের ঘুম ভেঙে যায়। তিনি বলেন, ‘‘উঠে দেখি গোটা ঘর ধোঁয়ায় ভর্তি। দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। কোনও ভাবে ঘরের বেরিয়ে প্রাণে বাঁচি।’’ প্রতিবেশীরাই জল দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে তিনজনই মারা গিয়েছে। ফলে, দমকল ডাকার সময়ও আর পাওয়া যায়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, গণেশকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঠিক কী ঘটেছিল তা জানার চেষ্ট হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Fire Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE