অস্তাচলে: হলদি দ্বীপে সূর্যাস্ত। ছবি: আরিফ ইকবাল খান।
পর্যটক টানতে জেলার সৈকত শহরের পর্যটন শিল্পের উপরে সবর্দা জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে অবেহলায় পড়ে নেই জেলার অন্য আকর্ষণীয় স্থলগুলিও। পর্যটকদের আকর্ষিত করে, এমন ছোট-বড় বহু এলাকায় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সেই তালিকায় সংযোজন হয়েছে হলদিয়ার হলদি দ্বীপ। ম্যানগ্রোভ অরণ্যে ভরপুর এই দ্বীপ এলাকাটি স্থানীয়ভাবে ‘মিনি সুন্দরবন’ নামেও পরিচিত।
ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হলদি নদীতে রয়েছে এই দ্বীপ। ২০১১ সালে নব গঠিত এই দ্বীপে শুরু হয়েছিল বনসৃজন। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির বন এবং ভুমি কর্মাধক্ষ্য প্রয়াত সোমনাথ মাইতি সেই সময় সুন্দরবন এলাকা থেকে ম্যানগ্রোভ এনে লাগিয়েছিলেন এই দ্বীপে। সেই এই ম্যানগ্রোভের জঙ্গল বর্তমানে বেড়েছে। কয়েকশো হেক্টর জমিতে বৃদ্ধি পেয়েছে কাঁকড়া, কেওড়া, বাইনের মত ম্যানগ্রোভ গাছ। হরেক রকম পাখি আর মনোরম সূর্যাস্ত দেখানোকে সম্বল করেই পর্যটনের নতুন ক্ষেত্র হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে এই দ্বীপকে। কারণ, প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা এই দ্বীপ কার্যত জীববৈচিত্রের আড়ত।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সুত্রের খবর, এত দিন সাধারনের মানুষের কার্যত ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল হলদি দ্বীপ। যেতে গেলে নিত হত অনুমতি। সম্প্রতি প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এই দ্বীপ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তার পরেই পর্যটন বাড়ানো পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, এই দ্বীপে যাওয়ার জন্য নৌকা করেছে ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত। দ্বীপের নামার জন্য বানানো হয়ছে ঘাট। দ্বীপে একটি পুকুর রয়েছে। সেই পুকুরকে ঘিরেও রয়েছে নানা পরিকল্পনা। এই দ্বীপে খড়ের ছাউনি দিয়ে কয়েকটি আস্থায়ী কাঠামো তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। রয়েছে পানীয় জলের ব্যাবস্থা। পিকিনিক করতে এলে রান্না করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে দ্বীপে এখনও কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। একটি একতলা পাকা একটি বাড়ি থাকলেও সেখানে রাতে কেউ থাকেন না।
সম্প্রতি দ্বীপে গিয়ে দেখা গেল কয়েকজন পর্যটককে। তাঁদের নিয়ে যাওয়া নৌকার মাঝি অচিন্ত্য ঘোষ বলছেন, ‘‘এখন অনেকেই আসছেন এই দ্বীপে। তাঁদের ছেড়ে দিয়ে চলে আসি। ফোন করে ডাকলে আবার নিতে যাই। তবে দ্বীপে কোনও হিংস্র জন্তুর খবর পাইনি।’’
স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া এখনও এই দ্বীপে যাওয়া নিষেধ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী। তিলক বলেন, ‘‘ওই দ্বীপকে ঘিরে একাধিক উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে ব্লক প্রশাসনের। এখানে প্রচুর ম্যানগ্রোভ গাছ রয়েছে। এই গাছের ফুল মৌমাছিদের খুব পছন্দের। তাই সুন্দরবনের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বলে এই দ্বীপে প্রাকৃতিকভাবে মৌচাষের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ১৫০ ধরনের ভেষজ গাছ লাগানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy