ফাইল চিত্র।
বছর ঘুরলে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্য প্রশাসন এখন যে প্রকল্পগুলিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে, তার মধ্যে ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্র’ বা বিএসকে অন্যতম। স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শনের মতো বিএসকে পরিদর্শনেরও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুল, আইসিডিএসের মতো এ বার থেকে বিএসকে কেন্দ্রটাও মাথায় রাখতে হবে।এটাও কিন্তু ভিজিট করে দেখতে হবে কাজটা ঠিকমতো হচ্ছে কি না।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো পদক্ষেপ শুরু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক- কর্মীরা নিজ নিজ দফতরের পরিষেবার বিষয়ে বিএসকে-র সহায়কদের প্রশিক্ষণ দেবেন। এখন বিএসকে থেকে ৪২টি দফতরের ২২৪টি পরিষেবা মিলছে। ওই ৪২টি দফতরের আধিকারিক- কর্মীদের নিয়ে সম্প্রতি মেদিনীপুরে জেলাস্তরের এক প্রশিক্ষণ শিবির হয়েছে। এখানে প্রশিক্ষিত আধিকারিক-কর্মীরাই বিএসকে-র সহায়কদের প্রশিক্ষণ দেবেন। তাঁরা নিজ নিজ দফতরের পরিষেবার বিষয়গুলি সম্পর্কে বিশদে ওই সহায়কদের জানাবেন। কয়েকটি ধাপে এই প্রশিক্ষণ শিবির হতে পারে। জেলায় এখনও পর্যন্ত ১৭৮টি বিএসকে চালু হয়েছে। ডিএম অফিস, এসডিও অফিস, ব্লক অফিসের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গ্রন্থাগার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল পরিদর্শকের অফিসে এই কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ব্লকস্তরে কো- অর্ডিনেটর বিডিও, মহকুমাস্তরে কো- অর্ডিনেটর এসডিও। কেন্দ্র পিছু দু’জন করে সহায়ক (ডাটা এন্ট্রি অপারেটর) রয়েছেন। দু’টি করে প্রিন্টার- স্ক্যানার এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকা কম্পিউটার রয়েছে। সম্প্রতি মেদিনীপুরে দু’দফায় ওই প্রশিক্ষণ শিবির হয়েছে।
জেলাশাসক রশ্মি কমলের দাবি, ‘‘জেলায় বিএসকেগুলি ভালভাবেই চলছে। এখান থেকে সাধারণ মানুষ অনলাইনে সরকারের সমস্ত পরিষেবা পাচ্ছেন।’’ জেলার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সুদীপ্ত সাঁতরা জানাচ্ছেন, ‘‘বিএসকেগুলির উপরে নজর রয়েছে। কাজ ঠিকঠাক হচ্ছে কি না তা দেখা হচ্ছে।’’ সরকারি পরিষেবাগুলি মানুষের কাছে পৌঁছতেই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নিয়ন্ত্রণে ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্র’ (বিএসকে) চালু হয়েছে। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। অনেকের মতে, নিজস্ব পরিষেবাগুলির নিবিড় প্রচার এবং তা সর্বত্র পৌঁছতে নিজেদের দফতরকেই কাজে লাগাতে চাইছে রাজ্য সরকার। তবে প্রশাসনিক যুক্তি, বিভিন্ন দফতরের অনলাইন পরিষেবা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই রাজ্যের এই পদক্ষেপ।
প্রশাসনের একাধিক সূত্রের বক্তব্য, এখনও সবার হাতে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ট্যাব এবং ইন্টারনেট সংযোগ নেই। অথচ, মানুষের যে তথ্যগুলি সরকারের ঘর থেকে নিতে হয়, তার বেশিরভাগই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বিভিন্ন দফতরের ওয়েবসাইটে সহজলভ্য। সেই কারণে তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত মানুষের জন্য এই ধরনের সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এক সময়ে ‘তথ্যমিত্র’ কেন্দ্র চালু হয়েছিল। ওই কেন্দ্র রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ‘তথ্যমিত্র’ কেন্দ্রের ধাঁচেই চালু হয়েছে বিএসকে। এই কেন্দ্র পুরোপুরি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতিটি বিএসকে- র সামনে একটি করে বোর্ড লাগানো হচ্ছে। কেন এমন কেন্দ্র, এখান থেকে কী কী পরিষেবা মিলবে, সে সব ওই বোর্ডে লেখা থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy