প্রায় সাড়ে বারো ঘণ্টা পর মুক্ত হলেন উপাচার্য। রাতে বাড়ি ফেরার আগে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলতে শোনা গেল, ‘‘তোমাদেরই জয় হল। তোমরা খুশি তো!’’
অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিলের বিরোধিতায় সোমবার পড়ুয়াদের একাংশ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর দফতরের সামনে বিক্ষোভ-অবস্থানে সামিল হন। উপাচার্যের আশ্বাসে শেষমেশ রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ অবস্থান-বিক্ষোভ ওঠে। রফাসূত্র মিলল কী ভাবে? সূত্রের খবর, স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠনের ব্যাপারে বিভাগীয় প্রধানদের কাছে যে নোটিস পাঠানো হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হতে পারে। আপাতত, আগের ছাত্র সংসদই কাজ চালাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নতুন ছাত্র সংসদ গঠন না-হওয়া পর্যন্ত আগের সংসদই ছাত্র সংসদের কাজকর্ম দেখভাল করবে। এটাই হয়।” যদিও উপাচার্য বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) ডাকা হয়েছে। ইসি- তে এ ব্যাপারে আলোচনা হবে।’’
দিন কয়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের মেয়াদ ফুরিয়েছে। এরপরই অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গঠন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সম্প্রতি ইসি-র বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়। ঠিক হয়, ছাত্র কাউন্সিল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। পরে বিভাগীয় প্রধানদের কাছে একটি নোটিস পৌঁছয়। ছাত্র কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর নাম চাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পদক্ষেপের কথা জানতে পেরেই অসন্তুষ্ট হন পড়ুয়াদের একাংশ।
সোমবার বেলা ১১টা থেকে উপাচার্যের দফতরের সামনে শুরু হয় বিক্ষোভ। পড়ুয়াদের সেই বিক্ষোভে অন্যদের পাশাপাশি যোগ দেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরাও। তবে বিক্ষোভ-সমাবেশে ছিল না কোনও দলীয় পতাকা। ‘ঘেরাও’ হয়ে থাকলেও উপাচার্য কোনও রকম কড়া ব্যবস্থা নেননি। বরং শুরু থেকেই তিনি আলোচনার রাস্তা খোলা রেখেছিলেন। রঞ্জনবাবুর বক্তব্য, “ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান শান্তিপূর্ণই ছিল।” বিক্ষোভ -কর্মসূচিতে ছিলেন সদ্য মেয়াদ উত্তীর্ণ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আকাশপ্রদীপ ভৌমিক, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ বেরা-সহ আরও অনেকে। প্রসেনজিৎ বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের দাবিই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।” বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের দাবি ছিল, অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার সিদ্ধান্ত ‘অগণতান্ত্রিক’। অরাজনৈতিক নয়। রাজনৈতিক ছাত্র সংসদের দাবিতে সরব হন পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, “কারও গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করতে চাই না। আইনের মধ্যে থেকে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। ইসি-র বৈঠকে সেই আলোচনা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy