নিহত সূর্যদীপ সাঁতরা। —নিজস্ব চিত্র
তিন দিন ধরে নিখোঁজ যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হল পুকুরে। বৃহস্পতিবার সকালে চণ্ডীপুর বাজার সংলগ্ন বিডিও অফিসের পাশে একটি কচুরিপানা ভর্তি পুকুর থেকে সূর্যদীপ সাঁতরা নামে বছর একুশের ওই যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। দেঙ উদ্ধারের পর বাসিন্দারা ওই যুবককে খুন করা খুনের অভিযোগে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তাঁর প্রেমিকা-সহ পরিবারের লোকজন ও এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।
বিক্ষোভ সামাল দিতে পুলিশ ওই যুবকের প্রেমিকা ও তাঁর বাবা-মা এবং এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে আটক করে। পরে মদন প্রধান নামে ওই সিভিক ভলান্টিযারকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার মদনকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক মদনকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের গলায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-সদর-শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ত্রিকোণ প্রেমের জেরে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তদন্ত করা হচ্ছে’’।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, চণ্ডীপুর বাজারের পাশেই কালিকাখালি গ্রামের বাসিন্দা সূর্যদীপ একটি বেসরকারি ভেষজ সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান সূর্য। রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেও কোনও সন্ধান পাননি। মঙ্গলবার চণ্ডীপুর থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। তারপর এদিন সকালে বাড়ি থেকে কিছু দূরে কচুরিপানা একটি পুকুর থকে জল ছেঁচে ফেলার সময় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর সাইকেলটিও পাওয়া যায় পুকুরে।
পরিবারের অভিযোগ, সূর্যদীপের সঙ্গে পাশের সরিপুর গ্রামের বাসিন্দা এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি কিশোরীর সঙ্গে চণ্ডীপুর থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার মদন প্রধানের সম্পর্ক তৈরি হয়। মদন সূর্যদীপকে ওই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করার জন্য হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ। সূর্যদীপের মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই করে পুলিশ জানাতে পেরেছে ওই কিশোরীকেই শেষবার ফোন করেছিলেন তিনি। পুলিশ কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। যদিও ওই কিশোরী পুলিশকে জানায়, সে নিখোঁজের বিষয়ে কিছুই জানে না।
সূর্যদীপের বাবা দীপক সাঁতরার অভিযোগ, কিশোরীর বাবা-মা এবং সিভিক ভলান্টিয়ার মিলে পরিকল্পনা করে সূর্যদীপকে খুন করে দেহ পুকুর ফেলে দেয়। পুলিশের দাবি, জেরায় সিভিক ভলান্টিয়ার মদন সূর্যদীপকে খুনের কথা স্বীকার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মদন জানিয়েছে, সোমবার রাতে সূর্যদীপ ওই কিশোরীর সঙ্গে দেখা করে যখন বাড়ি ফিরছিলেন সেই সময় চণ্ডীপুরে বিডিও অফিসের কাছে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সূর্যদীপকে সে ওই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বললেও সে রাজি হয়নি। এই নিয়ে বচসার সময় মদন সূর্যদীপের গালে চড় মারে। এতে সূর্যদীপ রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে মদন তাঁকে রাস্তার পাশে পুকুরে ঠেলে ফেলে দেয় ও তাঁর সাইকেলও পুকুরে ফেলে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy