এ ভাবেই সচেতন করেন শঙ্কর সাহা। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র
বন্যায় ভেসে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। ভূমিকম্পে ভেঙে পড়ছে বাড়ি। আছড়ে পড়ছে ঘূর্ণিঝড়। হিমবাহের স্তর ক্রমশ গলছে। বিজ্ঞানীরা বারবার সাবধান করছেন, ‘‘পরিবেশ দূষণের কারণেই ঘটছে এ সব!’’ কিন্তু সে কথা কানে তুলছে কে? কিন্তু সবাই তো আর এক রকম হন না। কয়েক বছর আগে একটি টিভি চ্যানেলে চ্যানেলে পরিবেশ নিয়ে আলোচনা শুনে চমকে উঠেছিলেন বহরমপুরের গোয়ালজানের বুধুরপাড়ার শঙ্কর সাহা।
বছর আটান্নর ফেরিওয়ালা শঙ্কর পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে কী ভাবে বাঁচানো যায় তা নিয়ে তিনি ভাবতে শুরু করেন। তার পরে কারও ভরসায় বসে না থাকে একাই লোকজনকে সচেতন করার কাজ শুরু করেন। সপ্তাহে এক দিন বহরমপুরে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে দূষণ রোধ ও গাছ লাগানো-সহ বেশ কিছু আর্জি লেখা ফ্লেক্স হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন শঙ্কর। পথ চলতি লোক কেউ দাঁড়িয়ে ফ্লেক্সের লেখা পড়ছেন, কেউ পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন।
শঙ্করের স্পষ্ট কথা, ‘‘যদ্দিন বাঁচব ততদিন সপ্তাহে এক দিন পরিবেশ বাঁচাতে খরচ করব।’’
শঙ্কর কলকাতা ও বহরমপুর থেকে হার্ডওয়ারের সামগ্রী এনে গ্রামে গ্রামে ফেরি করেন। প্রতি মঙ্গলবার তাঁর ছুটি। এ দিন জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ফ্লেক্স হাতে তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন। শঙ্কর বলেন, বছর দুয়েক আগে টিভিতে দেখেছিলাম পরিবেশ দূষণের ফলে পৃথিবী ধ্বংসের পথে। গাছ কাটা হচ্ছে। কংক্রিটের জঙ্গলে ভরে উঠছে গ্রাম থেকে শহর। জলাভূমি ভরাট করা হচ্ছে। প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। শঙ্করের দাবি, ‘‘জেলা প্রশাসনিক ভবনে জেলার সব এলাকার সব ধরনের মানুষ আসেন। তাঁদের সচেতন করতেই আমার এই ছোট্ট চেষ্টা। আমি বিশ্বাস করি, সকলেই এক দিন বিষয়টি বুঝবেন।’’
বহরমপুরের সৈদাবাদ মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক জসিমউদ্দীন আহমেদ উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষক। তাঁর দাবি, ‘‘আমরাও পড়ুয়াদের পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে সচেতন করি। গাছ লাগানোর পাশাপাশি পৃথিবীকে দূষণমুক্ত করার বিষয়ে শঙ্কর সাহা যে ভাবে উদ্যোগী হয়েছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy