হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই পড়ুয়া। —নিজস্ব চিত্র।
রঘুনাথগঞ্জের একটি বেসরকারি স্কুলের কয়েক জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র নিগ্রহের অভিযোগ উঠল। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সামিম হোসেন নামে বছর তেরোর ওই ছাত্রকে শনিবার সকালে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ছাত্রের বাবা রেজাউল করিম এ দিন বিকেলে রঘুনাথগঞ্জ থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন। করিম বলেন, ‘‘যে ভাবে ছেলেকে মারধর করা হয়েছে তাতে বুঝতেই পারছি না ওর উপর এক আক্রোশ ছিল কেন! ও তো এখন ওই স্কুলে আবার যেতে হবে শুনেই ভয় কুঁকড়ে যাচ্ছে।’’
নির্যাতিত ছাত্রের বাড়ি বীরভূমের নলহাটি এলাকার জ্যৈষ্ঠা গ্রামে। গত বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে রঘুনাথগঞ্জ থানার তালাই মোড়ের কাছে ওই বেসরকারি স্কুলে ভর্তি হয় সে। স্কুলেরই ছাত্রাবাসে থাকত সে। তার দিদিও ওই স্কুলেরই দশম শ্রেণির ছাত্রী, রঘুনাথগঞ্জে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে স্কুলে যাতায়াত করে।
সামিমের অভিযোগ, “শুক্রবার দুপুরে টিফিনের সময় ক্লাসে হৈচৈ হচ্ছিল। তখনই দু’জন শিক্ষক ক্লাসে ঢুকে কয়েকজন ছাত্রকে ধরে নিয়ে যান স্টাফ রুমে। তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। অফিস ঘরের দরজা বন্ধ করে বেধড়ক মারতে শুরু করেন দু-তিন জন শিক্ষক। চড়, থাপ্পড়ের সঙ্গে এক শিক্ষক স্কেল দিয়েও পেটাতে থাকেন। লাথিও মারেন।’’ মারের চোটে রাতভর প্রচন্ড যন্ত্রণা নিয়ে ঘুমোতে পারেনি ওই ছাত্র, সকাল থেকেই তার জ্বর আসে বলে বাড়ির লোকজন জানাচ্ছেন।
শনিবার ছিল স্কুলে পুজোর ছুটির দিন। সকালে তার বাবা ও মা স্কুলে আসেন তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে। রেজাউল করিম বলেন, ‘‘আমাদের দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়ে ছেলে। তার মুখ থেকেই শুনি সমস্ত ঘটনা। জামা খুলে দেখা যায় গোটা শরীরে মারের দাগ। সঙ্গে সঙ্গে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে জানাই। কিন্তু তিনি জানান, ‘‘স্কুল আজ থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। তাই এ নিয়ে পয়লা নভেম্বরের আগে কিছু করা যাবে না।’’
রেজাউল বলেন, “আমি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে বলি মারের পর কেন ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি? কেনই বা আমাকে জানানো হয়নি ঘটনা।’’ এরপর তাঁরা জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিকেলেই বাবা রেজাউল করিম স্কুলের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন রঘুনাথগঞ্জ থানায়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দেবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি যতদূর জানি, সপ্তম শ্রেণির অঙ্ক ক্লাসে গোলমাল করছিল কয়েকজন ছাত্র। তখনই ক্লাসের শিক্ষক তাদের চড় থাপ্পড় মারেন। এর বেশি কিছু ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy