ধর্মরাজ হাজরা। নিজস্ব চিত্র
সারা দিন নিখোঁজ ছিলেন তিনি। সোমবার বাড়ি লাগোয়া একটি ডোবায় তাঁর প্রায় পচা-গলা দেহের খোঁজ পেলেন গ্রামবাসীরা। রেজিনগর এলাকার বিজেপি-র মণ্ডল-কর্মী ধর্মরাজ হাজরার (৫২) এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনে তৃণমূলের ছায়া দেখছে বিজেপি। থানায় তারা সরাসরি অভিযোগ দায়ের করেছে, এই খুন তৃণমূলের মদতপুষ্ট গুন্ডাদের।
বিজেপি-র অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ‘তৃণমূলের তাণ্ডব’ রুখতে এগিয়ে এসেছিলেন ধর্মরাজ। তার পর থেকেই ফোনে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলেও জানিয়েছে বিজেপি। তারই খেসারত দিতে হল তাঁকে। এ দিন তালডাঙা গ্রামের একটি বড় জলাশয়ের পাশে তাঁর দেহের খোঁজ মেলে। মৃতের হাত বাঁধা ছিল। শরীরে ছিল অজস্র ক্ষত চিহ্ন।
রবিবার বিকেল থেকে ধর্মরাজের খোঁজ ছিল না। বিজেপির জেলা নেতৃত্বের দাবি, ধর্মরাজ হাজরা বেলডাঙা ২ এর ৫৬ নম্বর মণ্ডলের ১৪২ বুথ কমিটির সদস্য। ভোটের দিন একের পর এক গন্ডগোলের সময়ে সক্রিয় ভাবেই বাধা দিয়েছিলেন তিনি। বিজেপির দাবি, পঞ্চায়েত দখলের জায়গায় চলে এলেও তাদের হারিয়ে তৃণমূলকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তার পর থেকেই এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপির সম্পর্ক
তলানিতে ঠেকেছিল।
ধর্মরাজের স্ত্রী মানু হাজরা বলেন, ‘‘ভোটের দিন গ্রামে গন্ডগোল হয়। তার পর থেকেই তৃণমূলের জনা কয়েক কর্মী আমার স্বামীকে হুমকি দিচ্ছিল। রবিবার বিকেলে সে ‘জমিতে ফসল দেখতে যাচ্ছি’ বলে বেরোয়, আর ফেরেনি। খোঁজাখুঁজির পরেও তাঁর আরও কোনও হদিশ মেলেনি। এ দিন বেলায় পাশের জলাশয়ে তাঁর দেহ ভাসতে দেখা যায়। তাঁর হাত বাঁধা ও কানে রক্তের দাগ ও মুখের কয়েকটি স্থানে ক্ষতের চিহ্ন। পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ জানাব।’’
বেলডাঙা ২ ব্লকের সাধারণ সম্পাদক নেপালচন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘ভোটের দিন তালডাঙায় তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী বুথ দখল করতে যায়। কিন্তু ধর্মরাজ হাজরার নেতৃত্বে তাদের বাধা পেতে হয়। ফলে ওরা বুথ দখল করতে পারেনি। ওই বুথে বিজেপি বেশি ভোট পেলেও তৃণমূলকে জিতিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই তৃণমূলের রাগ। ওই ঘটনায় তৃণমূল বিজেপির আট জনের নামে মামলাও করা হয়েছে।’’ তৃণমূলের বেলডাঙা ২ ব্লক (পশ্চিম) সভাপতি সত্যনারায়ণ রায় বলেন, ‘‘সব মৃত্যুই দুঃখের। যেটা শোনা যাচ্ছে ধর্মরাজ হাজরা জলে ডুবে মারা গিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করবে। যদি তৃণমূলের লোকজন এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে পুলিশ নিশ্চয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’
শক্তিপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের পরেই বোঝা যাবে মৃত্যুর কারণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy