তৃণমূলের ধমক-চমকে এক বার থমকে গেলেও ফের শুরু হয়েছে জেলায় ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কার্ড বিলি। বিজেপির নিয়ন্ত্রণে থাকা বেথুয়াডহরি ১ পঞ্চায়েত এলাকায় এক কংগ্রেস সদস্যকেও দেখা গেল নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কার্ড বিলিতে সাহায্য করতে।
কৃষ্ণনগরে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প থেকে রাজ্যের সরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শনিবার জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকজন কৃষ্ণনগর হেড পোস্ট অফিসে গিয়ে হুমকি দেন, কার্ড বিলি করা হলে কর্মীদের ভিতরে আটকে দফতরে তালা লাগিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকে কার্ড বিলি বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার আবার বিজেপির নেতারা গিয়ে কার্ড বিলির দাবি জানান।
ডাকঘর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার থেকে জেলার বিভিন্ন পোস্ট অফিস থেকে আবার কার্ড বিলি শুরু হয়েছে। কৃষ্ণনগর হেড পোস্ট অফিস ছাড়া আর কোথাও তেমন বাধা না আসায় কর্মীরা সাহস ফিরে পেয়েছেন। এক কর্তার কথায়, “যে কোনও চিঠিই আমরা বিলি করতে বাধ্য। দু’দিন পরে হলেও করতে হত। পরিস্থিতি থিতিয়ে যাওয়ায় আমরা আবার নতুন করে বিলি করা শুরু করলাম।” নদিয়া উত্তর পোস্টাল ডিভিশনের সুপার সুব্রত দত্ত অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিন আবার অন্য বিতর্ক তৈরি হয় বেথুয়াডহরি ১ পঞ্চায়েতের অধীন জগদানন্দপুরে। সেখানে রাস্তার পাশে টেবিল-চেয়ার পেতে কার্ড বিলি করছিলেন ডাককর্মীরা। সঙ্গে ছিলেন পঞ্চায়েতের সদস্য, বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের পুলক সিংহ। এলাকার বহু মানুষ কার্ড নেওয়ার জন্য ভিড় করে এসেছিলেন। কিন্তু ওই পঞ্চায়েতে ক্ষমতাসীন বিজেপির কেউ যেখানে যাননি, কংগ্রেস সদস্য সেখানে গিয়ে হাজির হলেন কেন?
তৃণমূলের দাবি, এখানে কংগ্রেস আর বিজেপি যে গাঁটছড়া বেঁধেছে, এটা আসলে তারই প্রমাণ।’’ আর জেলা বিজেপির কার্যকর্তা সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য নিজের ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কার্ড পেতে সাহায্যে করেছেন। বরং মুখ্যমন্ত্রী যে বিরোধিতা করছেন, সেটা মানুষের স্বার্থে নয়।’’ পুলকও বলেন, ‘‘আমি অঞ্চল সদস্য, মানুষের সুবিধার জন্যই হাজির ছিলাম। এর মধ্যে রাজনৈতিক বিষয় নেই।’’
নাকাশিপাড়ার বিধায়ক, তৃণমূলের কল্লোল খাঁ বলেন, ‘‘কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য কেন ওখানে গেলেন, তা তাঁর দলের নেতারাই ভাল বলতে পারবেন।’’ রাতে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অসীম সাহা বলেন, ‘‘উনি আগে আমাদের দলে থাকলেও এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই।’’
ডাকঘর সূত্রের খবর, পরিস্থিতি বুঝে ফের পুরোদমে কার্ড বিলি শুরু করা হবে। জেলা তৃণমূল সভাপতি অবশ্য রাতে ফের হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘কার্ড বিলি করা হলে তৃণমূল স্তরের মানুষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy