Advertisement
১০ মে ২০২৪
নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে মিসড কলের আবেদন

সিএএ কত ভাল বোঝাতে প্রচারে বিজেপি

পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে নতুন বছরের প্রথম থেকেই রাজ্যে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ সম্পর্কে বোঝানো এবং এর পক্ষে জনমত সংগঠিত করার কাজ শুরু করল বিজেপি।

 নাগরিকত্ব আইন আর জাতীয় নাগরিক পঞ্জি কী, সেটা বোঝাতে রাস্তায় নেমেছে বিজেপি। কৃষ্ণনগরে রবিবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

নাগরিকত্ব আইন আর জাতীয় নাগরিক পঞ্জি কী, সেটা বোঝাতে রাস্তায় নেমেছে বিজেপি। কৃষ্ণনগরে রবিবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩৫
Share: Save:

দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সর্বস্তরে উত্তাল প্রতিবাদ-বিক্ষোভে কার্যত কোণঠাসা বিজেপি। তাতে অস্বস্তিতে রয়েছেন রাজ্যের নেতারাও। মানুষকে এই আইন সম্পর্ক‌ে ভালভাবে ওয়াকিবহাল না করেই তা পাশ করাটা নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারার মতো হয়ে যাচ্ছে বলে তাঁদের অনেকেরই আশঙ্কা। সে কথা দিল্লিতেও জানিয়েছেন তাঁরা।

পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে নতুন বছরের প্রথম থেকেই রাজ্যে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ সম্পর্কে বোঝানো এবং এর পক্ষে জনমত সংগঠিত করার কাজ শুরু করল বিজেপি। রবিবার ছিল তার প্রথম দিন। নদিয়া জেলার একাধিক জায়গায় এ দিন এই কর্মসূচি পালন হয়েছে। নাগরিকত্ব আইন কত ভাল তা আম জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন দলীয় নেতারা। বিরোধীরা অহেতুক আইন নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা ছড়াচ্ছে বলেও দাবি করেন তাঁরা।

মাজদিয়ায় রবিবার একটি মিছিল বের করে মতুয়াদের বিজেপি-পন্থী অংশ। মিছিল শেষেও নেতারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে নাগরিকত্ব আইনের সুফল সম্পর্কে বোঝান। এ দিন বিজেপি-র তরফে একটি টোল ফ্রি নম্বর জানিয়ে তাতে নাগরিকত্ব বিলের সমর্থনে নাগরিকদের ‘মিসড কল’ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিলি করা হয়েছে লিফলেট। বিরোধী শিবিরের অনেকেরই মত, মিসড কলের মাধ্যমে আসলে বিজেপি জল মাপতে চাইছে। দেখতে চাইছে এত বিক্ষোভ প্রতিবাদের পর ঠিক কত শতাংশ লোক এখনও তাদের পক্ষে থাকছে।

সিএএ-র আওতায় কেন প্রতিবেশী তিন দেশের থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা মুসলিমদের রাখা হয়নি, সে কথাও এ দিন জনে-জনে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বিজেপির তরফে। দলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশুতোষ পাল বলছেন, “আমরা মানুষের সামনে প্রকৃত সত্যটা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। বিরোধীরা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমরা চাই, প্রকৃত সত্য মানুষ জানুক।”

নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী, সাধারণ নাগরিকেরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। রবিবার থেকে বিজেপি সাংগঠনিক ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাস্তায় নামল। রবিরার সকালে কৃষ্ণনগরে দলের জেলা কার্যালয় সংলগ্ন উকিলপাড়া এলাকায় বিজেপি নেতারা প্রচার শুরু করেন।

রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংহ, সম্পাদক মনোজ বিশ্বাস, জেলা সভাপতি আশুতোষ পাল-সহ একাধিক জেলা স্তরের কর্মকর্তা প্রচার কর্মসূচিতে ছিলেন। গত ২ জানুয়ারি এ ব্যাপারে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মণ্ডল সভাপতিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি মণ্ডল স্তরে ফের প্রশিক্ষণ শিবির হবে। ‘শক্তিকেন্দ্র’ গুলিতে একই ভাবে বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে কর্মশালা হবে।

রানাঘাট কেন্দ্রের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের কথায়, “আমরা মানুষকে স্পষ্ট ভাবে জানাচ্ছি যে, যাঁরা বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে এসেছেন তাঁদের আমরা শুধু নাগরিকত্বই নয়, তাঁদের চাকরি থেকে শুরু করে সামাজিক সুরক্ষাও দিতে পেরেছি।” আজ সোমবার কৃষ্ণনগরে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে মিছিল করার কথা বিজেপি-র।

নাগরিকত্ব বিলের সমর্থনে এ দিন মাজদিয়ায় মিছিল বের করেছিল মতুয়াদের বিজেপি-পন্থী অংশ। তবে সেই মিছিলকে ঘিরে বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে কোন্দল। সেখানে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না স্থানীয় বিধায়ক আশিস বিশ্বাস।

যদিও আশিসবাবু এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান নি। শুধু বলেছেন, “আমি অসুস্থ। তাই যেতে পারিনি।” আর মাজদিয়ার বাসিন্দা তথা মতুয়া শিবিরের অন্যতম বিজেপি মুখ মুকুটমণি অধিকারী বলছেন, “এটা মতুয়াদের কর্মসূচি। সেখানে আমরা কোনও রাজনৈতিক নেতাকে আলাদা করে নিমন্ত্রণ জানাইনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CAA NRC BJP Pro CAA Campaign
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE