Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
তৃণমূলে কোন্দল তেহট্টে

পার্থ সভা ছাড়তেই হাতাহাতি

পার্থবাবু সভা ছেড়ে চলে যেতেই ধুন্ধুমার বাধে। তাপস ও বিশ্বনাথ অনুগামীদের মধ্যে তর্কাতর্কি, পরে হাতাহাতি বেধে যায়। তৃনমূলের তেহট্ট ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ স্বরূপ ঘোষের আক্ষেপ, “পার্থবাবু চলে যাওয়ার পরেই দুই পক্ষে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।

বিশৃঙ্খলা: তৃণমূলের কর্মিসভায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

বিশৃঙ্খলা: তৃণমূলের কর্মিসভায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

মহাসচিবের সভাতেই প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বুধবার দুপুরে তেহট্টে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন দুই গোষ্ঠীর লোকজন। তবে মহাসচিব ততক্ষণে বেরিয়ে গিয়েছেন।

২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার জন্য এ দিন তেহট্ট, ফুলিয়া ও কৃষ্ণনগরে যান তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তেহট্টের দীনবন্ধু মঞ্চে জেলার ছ’টি বিধানসভা এলাকার বিধায়ক ও কর্মীদের ডাকা হয়েছিল। পার্থবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি ও কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।

পার্থবাবু তাঁর বক্তৃতা শেষ করে চেয়ারে বসতেই তেহট্ট ২ ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ মঞ্চে গিয়ে অনুয়োগ করেন, অন্যায় ভাবে তাঁকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পার্থবাবু জেলা সভাপতিকে বিষয়টি দেখতে বলেন। ওই সময়েই বিশ্বনাথের কিছু সমর্থক ‘পলাশিপাড়ার বিধায়ক তাপস সাহা মুর্দাবাদ, বিশ্বনাথ ঘোষ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে থাকেন।

পার্থবাবু সভা ছেড়ে চলে যেতেই ধুন্ধুমার বাধে। তাপস ও বিশ্বনাথ অনুগামীদের মধ্যে তর্কাতর্কি, পরে হাতাহাতি বেধে যায়। তৃনমূলের তেহট্ট ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ স্বরূপ ঘোষের আক্ষেপ, “পার্থবাবু চলে যাওয়ার পরেই দুই পক্ষে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। আমি পলাশীপাড়ার বিধায়ককে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার গায়েও মার পড়েছে।”

বিশ্বনাথের আক্ষেপ, তিনিই সিপিএম অধ্যুষিত পলাশিপাড়ায় তৃণমূলের সংগঠন বাড়িয়েছেন। কিন্তু বিধানসভা ভোটে জেতার পরে তাপস সাহা তাঁকে অন্যায় ভাবে সরিয়ে দিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘পার্থবাবু বেরিয়ে যাওয়ার পরে তাপসের কিছু লোকজন আমার সমর্থকদের সঙ্গে ঝামেলা করে।’’ বিধায়ক বলেন, “ফনি তো বিধানসভা ভোটেই দলবিরোধী কাজ করেছিলেন। তা আমি নেতৃত্বের কাছে জানিয়েছিলাম। তাতে তৎকালীন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত ওঁকে সরিয়ে দেবাশিস বিশ্বাসকে সভাপতি করেন। আজ যারা সভায় গোলমাল পাকিয়েছে, তারা আসলে সিপিএমের লোক। বিশ্বনাথবাবু তাদের নিয়ে এসেছিলেন। তেহট্টের কয়েক জন নেতারও মদত রয়েছে।”

গোলমালের আগে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁদের ভোটে আমরা জয়ী হয়েছি তাঁদের হাতেই দলের পতাকা তুলে দিতে হবে। পুরনো কর্মীদের সামনের সারিতে নিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে কিছু সুবিধাবাদী মানুষ দলের পতাকা হাতে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। এ সব বরদাস্ত করব না।’’

কংগ্রেসের নড়বড়ে অবস্থার সুযোগ নিয়ে বিজেপি রাজ্যে পদ্মফুল ফোটানোর কথা ভাবছে দাবি করে পার্থর কটাক্ষ, ‘‘ওরা ফুল কেন, একটা কুঁড়িও ফোটাতে পারবে না।’’ বিজেপির নাম না করেও বাদুড়িয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারা গণ্ডগোল করছে তারাই কয়েক দিনের মধ্যে ওখানে যাওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে। ওদের কাজই গণ্ডগোল পাকানো।”

পরে কৃষ্ণনগরের নতুন ডিআই অফিসের শিলান্যাস করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, “শুধু অফিস করলেই চলবে না। ডিআইদের আরও সচল হতে হবে। যাঁরা কাজের জন্য আসেন, তাঁদের ঘোরাঘুরি কমাতে হবে। দ্রুত কাজ করে দিতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE