সর্বাঙ্গপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র
নওদার প্রত্যন্ত গ্রাম সর্বাঙ্গপুরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হতেই আশার আলো দেখেছিলেন দুধসর, সর্বাঙ্গপুর আর ঘিরে থাকা খান পাঁচেক গ্রাম। ১৯৭৮ সালে তৈরি ওই হাসপাতালে এক সময়ে থাকতেন সর্বক্ষণের একজন চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, নার্স। রোগী ভর্তির ব্যবস্থা না থাকলেও সর্বক্ষনের জন্য মিলত জরুরি পরিষেবা। বছর কয়েক এ ভাবে চলার পরে ১৫ কিলোমিটার দূরে, কাদা মাড়িয়ে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে যাওয়ার যন্ত্রণাই ভুলে গিয়েছিলেন গ্রামের মানুষ। খুব বড়সড় শারীরিক সমস্যা ছাড়া আমতলার পথই মাড়াতেন না তাঁরা। তবে আলো ক্রমেই নিভে আসছিল, ২০০১ সালে সর্বক্ষণের জন্য চিকিৎসক ছিলেন সেযবারের মতো। তার পর থেকে এলাকার বাসিন্দাদের ভরসা ছিলেন 'হাফ ডাক্তার', অর্থাৎ ফার্মাসিস্ট। সর্দি-জ্বর, কাশিতে ভরসা সেই একা কুম্ভ ফার্মাসিস্ট। ছোটখাটো শারিরীক সমস্যায় দু'চারটে ট্যাবলেট ধরিয়ে দিয়ে ফার্মাসিস্ট পরামর্শ দিতেন, আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে যাওয়ার। বছর তিনেক আগে হাসপাতালে আসেন একজন হোমিও চিকিৎসক। গ্রামের মানুষের অধিকাংশের ভরসা রয়েছে হোমিওপ্যাথিতে। তবে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালেও রয়েছে হোমিওপ্যাথি ক্লিনিক। ফলে সপ্তাহে দু-তিন দিন সর্বাঙ্গপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা পরিষেবা দিলেও ডাক্তারবাবু নীলাঞ্জন রায়কে সপ্তাহের বাকি দু-তিন দিন যেতে হয় আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালের হোমিও ক্লিনিকে। সেই হাসপাতালই লক ডাউনের জেরে সপ্তাহে ছয় দিনই চিকিৎসক পাচ্ছে। চিকিৎসক নীলাঞ্জন রায় ও ফার্মাসিস্ট জুহি নাথ সপ্তাহে ছ’দিনই দিচ্ছেন চিকিৎসা পরিষেবা।
গ্রামের বাসিন্দা নুর কামাল শেখ বলছেন, ‘‘লক ডাউনের জেরে বন্ধ রয়েছে গাড়িঘোড়া। হোমিও ডাক্তার হলেও চিকিৎসা পরিষেবা তো মিলছে।’’ কিন্তু এই করোনা আবহেও এক জন হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতাল চলে? নওদার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মুকেশ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘জেলায় এমবিবিএস ডাক্তারের বড় অভাব। তাই আপাতত হোমিও চিকিৎসক দিয়েই গ্রামীণ হাসপাতাল চলছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা তথা সর্বাঙ্গপুর পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান বিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘হোমিও চিকিৎসক আছেন বটে, তবে করোনার ছায়ায় গ্রামের সকলেই আতঙ্কিত। মানুষের এই দুর্দিনে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ সপ্তাহে ছয়দিন চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন বটে, তবে গ্রামের মানুষের এক জন অ্যালোপ্যাথ চিকিৎসকের দাবি রয়েছে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy