Advertisement
১১ মে ২০২৪

বাসের জন্য হন্যে, মোদী দর্শনে কর্মীরা

কিন্তু কতটা মসৃণ হবে যাত্রা, সেই প্রশ্নও উঠছে। কারণ, বাস পাওয়া নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বিজেপির টানাপড়েন অব্যাহত। জেলা নেতাদের অভিযোগ, বাসের রুট পারমিট নিয়ে জটিলতা তৈরি করছে প্রশাসন। রবিবারের ব্রিগেডের আগে এই একই অভিযোগ তুলছে সিপিএমও। এবং এর পিছনে শাসক দলের হাত দেখছে দুই শিবিরই। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০২
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী নদিয়ায় আসবেন বলে নেতারা আশ্বাস দিলেও শেষমেশ তা হয়নি। তাঁর দর্শন পেতে তাই আজ, শনিবার পড়শি জেলার ঠাকুরনগরে চলেছেন বিজেপি কর্মীরা।

কিন্তু কতটা মসৃণ হবে যাত্রা, সেই প্রশ্নও উঠছে। কারণ, বাস পাওয়া নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বিজেপির টানাপড়েন অব্যাহত। জেলা নেতাদের অভিযোগ, বাসের রুট পারমিট নিয়ে জটিলতা তৈরি করছে প্রশাসন। রবিবারের ব্রিগেডের আগে এই একই অভিযোগ তুলছে সিপিএমও। এবং এর পিছনে শাসক দলের হাত দেখছে দুই শিবিরই।

উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে মোদীর সভায় মাঠ ভরাতে দলের নদিয়া দক্ষিণ জেলার নেতাকর্মীদেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তাদের উপরে ৫০ হাজার লোক নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব বর্তেছে। নেতাদের দাবি, সংখ্যাটা আরও বাড়বে। রবিবার ব্রিগেড ভরাতে সিপিএমের লক্ষ্য ষাট হাজার কর্মী নিয়ে যাওয়া। কিন্তু দুই দলেরই অভিযোগ, তৃণমূলের চাপে বাসের পারমিট আটকে দিয়েছে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর। জেলার চৌহদ্দি পেরিয়ে যেতে হলে ওই পারমিট লাগে। দুই দলই বিকল্প ব্যবস্থা করতে শুরু করেছে।

বিজেপির দাবি, তারা প্রায় সাড়ে চারশো বাস ‘বুক’ করেছে। সিপিএমও প্রায় একই সংখ্যক বাস নিচ্ছে। কিন্তু বাস মালিকদেরও একটা অংশের আক্ষেপ, বৃস্পতিবার থেকেই রুট পারমিট দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ফলে অগ্রিম নেওয়ার পরও অনেকে সিপিএম ও বিজেপিকে বাস দিতে পারছেন না। সংখ্যাটা প্রায় একশোর বেশি বলেই তাঁদের দাবি।

তা হলে কী ভাবে যাবেন তাঁদের কর্মী সমর্থকেরা?

দুই দলেরই জেলা নেতৃ্ত্বের বক্তব্য, বিকল্প হিসাবে তাঁরা লরি ও অন্য গাড়ি ভাড়া করেছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলছেন, “তৃণমূল যতই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করুক, আমরা লোক কমাচ্ছি না। বিকল্প ব্যবস্থা করছি।” বিজেপির দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকারের দাবি, “প্রশাসনকে চাপ দিয়ে বাস আটকাতে পারলেও আমাদের কর্মীদের আটকাতে পারবে না তৃণমূল। আমরা লরি, ম্যাটাডোর, ম্যাজিক গাড়ি ভাড়া করছি।”

গত ১১ জানুয়ারি মোদী কৃষ্ণনগরে আসবেন বলে প্রচার করেছিল বিজেপি। আসেননি। ২৪ জানুয়ারি আসবেন বলে জানিয়েও অসুস্থ হয়ে পড়ায় আসতে পারেননি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। হতাশ হয়ে পড়েছিলেন দলের নেতাকর্মীরা। শেষ পর্যন্ত ঠাকুরনগরে মোদী আসায় তাঁরা কিছুটা হলেও উজ্জীবিত। বাস নিয়ে ডামাডোলের মধ্যেই সকলকে গুছিয়ে সভাস্থলে নিয়ে যাওয়াটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে নেতাদের কাছে।

নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির পক্ষে অসীম দত্ত বলছেন, “সব বাস পারমিট পায়নি। বৃহস্পতিবার থেকে সমস্যা হয়েছে। পরিবহণ দফতর থকে জানানো হয়েছে, যান্ত্রিক কারণে চালানের রসিদ বার না হওয়ায় পারমিট দেওয়া যাচ্ছে না।” তিনি জানান, তাঁদের সদস্যদের বলে দেওয়া হয়েছে যে পারমিট ছাড়া যেতে গিয়ে কোনও সমস্যায় পড়লে সংগঠন পাশে থাকবে না। তবে বিরোধীদের অভিযোগ মানতে চাননি জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সৌমিত্র বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আচমকা সার্ভার বসে যাওয়ায় চালানের রসিদ বেরোচ্ছে না। সেই কারণেই আমরা পারমিট দিতে পারছি না। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ নেই।” তৃণমূলের নদিয়া জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলছেন, “একটা মৃত আর একটা মুমূর্ষু দল। এদের আমরা আটকাতে যাব কোন দুঃখে? মানুষের দরবারেই বুঝে নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM BJP tmc Bus Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE