Advertisement
০৭ মে ২০২৪

পড়ল কাটমানির পোস্টার, বিক্ষোভ

বিজেপির অভিযোগ, শৌচাগার নির্মাণ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কিংবা গীতাঞ্জলির মতো সরকারি  প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া হয়েছে।

কাটমানি নিয়ে বিক্ষোভ বিজেপির। চর মাজদিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

কাটমানি নিয়ে বিক্ষোভ বিজেপির। চর মাজদিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিপুর ও নবদ্বীপ  শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০০:৫৭
Share: Save:

তৃণমূল কাউন্সিলরেরা কাটমানি নিয়েছেন দাবি করে ফের রাতের অন্ধকারে পোস্টার পড়ল শান্তিপুরে। তার মধ্যে শান্তিপুরের দীর্ঘদিনের পুরপ্রধান তথা প্রাক্তন বিধায়ক অজয় দে-র ওয়ার্ডও আছে।

আবার কাটমানি ফেরতের দাবিতে নবদ্বীপের চরমাজদিয়া-চরব্রহ্মনগর পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। বুধবার দুপুরে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত, ঘণ্টা চারেক ধরে ওই বিক্ষোভ চলে। এ দিুকে, শান্তিপুরে কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ তুলে পোস্টার পড়েছে।

বিজেপির অভিযোগ, শৌচাগার নির্মাণ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কিংবা গীতাঞ্জলির মতো সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া হয়েছে। একশো দিনের কাজ বা সমব্যথীর মতো নানা প্রকল্পে যাঁরা সহায়তা পেয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকেও প্রতিটি ক্ষেত্রে কাটমানি নেওয়া হয়েছে। নবদ্বীপ ব্লকের বিজেপি নেতা চিত্তরঞ্জন দেবনাথ জানান, পঞ্চায়েত প্রধান রিনা দাসের কাছে আট দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতে প্রধান, তৃণমূলের রিনা দাস অবশ্য দাবি করেন, “সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। এই পঞ্চায়েতে কেউ কাটমানি খায়নি। কোনও দুর্নীতিও হয়নি। ওঁরা যা বলছেন, তার কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি।”

বুধবার সকালে শান্তিপুর শহরের ৩, ৬, ১৮, ১৩ নম্বর-সহ অন্তত গোটা দশেক ওয়ার্ডের নানা জায়গায় কাটমানি সংক্রান্ত পোস্টার দেখা যায়। এর মধ্যে ১৩ নম্বর খোদ পুরপ্রধানের ওয়ার্ড। পোস্টারগুলিকে কারও নাম না করে স্থানীয় কাউন্সিলরের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, সরকারি আবাস প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে কাটমানি নিয়েছেন। এর জন্য কাউন্সিলারের বাড়িতে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে। নীচে লেখা ‘ওয়ার্ডের নাগরিকবৃন্দ’। প্রতিটি পোস্টারের বয়ান এক, ছাপার রঙও একই। এমনকি একই মাপের কাগজে ছাপা। ওয়ার্ড পিছু শুধু বদলে গিয়েছে নম্বর। একই পোস্টার দিন কয়েক আগে শান্তিপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডেও দেখা গিয়েছিল।

পুরপ্রধান, তৃণমূলের অজয় দে বলেন, “গত ২৯ বছর ধরে আমি পুরপ্রধান। সিপিএমের আমলেও আমাদের দিকে কেউ আঙুল তুলতে পারেনি। শান্তিপুরের মানুষ আমাকে চেনেন, জানেন। এখন যাদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে তারাই এ সব করে রাজনৈতিক জলঘোলা করতে চাইছে।”

আগামী ২১ শে জুলাই, শহিদ দিবসের প্রস্তুতি উপলক্ষে পথসভায় সন্ধ্যায় পুরপ্রধান দাবি করেন, ‘‘পোস্টারে প্রকাশক বা ছাপাখানার নাম নেই। এটি অবৈধ। সারা রাত ধরে একটা গাড়িতে কয়েক জন পোস্টার মেরে গেল! পুলিশের টহলদারি কোথায় ছিল? আমাদের কাছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আছে। সেখানে কয়েক জনকে দেখা যাচ্ছে। তা পুলিশকে দেব। আমাদের যে সম্মানহানি হয়েছে তার বিরুদ্ধে পুলিশ পদক্ষেপ করুক।’’

এ প্রসঙ্গে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভি এস আর অনন্তনাগ বলেন, ‘‘টহলদারি অবশ্যই ছিল। পোস্টার সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও অভিযোগ হলে তা তদন্ত করে দেখা হবে।’’ টহল থাকলে এই ঘটনা নজরে এল না কেন? পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সেটা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মানবেন্দ্রনাথ রায় দাবি করেন, “শুধু শান্তিপুর নয়, সর্বত্রই কাটমানি ও তৃণমূল এখন অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। যাঁরা এর শিকার, তাঁরাই এখন প্রতিবাদ করতে এগিয়ে এসেছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Extortion Bribe TMC Shantipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE