ছবি পিটিআই।
উদ্বেগ আর উল্লাসের অদ্ভুত এক সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছে জেলার প্রান্তিক মানুষজন। তথ্য যাচাই প্রক্রিয়াকে নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি’র ছায়া ভেবে মানুষ যখন মরিয়া হয়ে সরকারি দফতরে হত্যে দিয়েছেন, তখন বেশ কিছু কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গ্রামীণ মানুষের সেই উৎকণ্ঠার সুযোগ নিয়ে ভোটার বা আধার কার্ডে সংশোধনের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা টাকা। কোথাও বা পাকাপোক্ত ভাবে জাল বিছিয়েছে দালাল রাজ। কোথাও ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের খবরও মিলেছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মুর্শিদাবাদে গিয়ে পরিবহণমন্ত্রীকে বার্তা দিতে হয়েছে, ‘দালালরাজ বন্ধ করুন।’ এই অবস্থায় এনআরসি আতঙ্ক কাটাতে ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের নিয়ে প্রচারের কথা ভাবছে জেলা প্রশাসন। শনিবার জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বেশ কয়েক জন ইমাম মোয়াজ্জিনদের নিয়ে প্রশাসনিক সভা করল বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন। বেলডাঙায় ১ ব্লক দফতরে এ দিন ৩৫ জন ইমাম মোয়াজ্জিনকে নিয়ে সভা করেন কর্তারা। ছিলেন বিডিও বিরূপাক্ষ মিত্র। সভায় ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের বলা হয়, সরকারি নির্দেশ মেনে রেশন কার্ড ও ভোটার কার্ড সংশোধন করার কাজ চলছে। এর সঙ্গে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষ ভয় পাচ্ছেন। তাঁদের ভয় কাটাতে প্রচার করতে হবে ধর্মীয় প্রচারকদের।
এ কথা গ্রামে গিয়ে বোঝানোর কথা বলেন প্রশাসনের কর্তারা। বিরূপাক্ষ বলেন, “আপনারা জুম্মাবারে মসজিদে আসা মানুষদের বোঝান। এনআরসির নিয়ে গুজবে যেন তাঁরা কান না দেন। গ্রামের মানুষকে বলুন রেশন কার্ড ও ভোটার কার্ড যাচাইয়ের সঙ্গে এনআরসির সম্পর্ক নেই। সরকারি ভাবে এনআসরি নিয়ে কোন খবর নেই প্রশাসনের কাছে।”
উপস্থিত ইমাম মোয়াজ্জিনদের মধ্যে মহম্মদ নূরজামান ও মহম্মদ আলিমূল বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসনের নির্দেশ মত এলাকার মানুষকে সচেতন করা শুরু হবে শীঘ্রই। শুক্রবার নমাজের পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।’’ ভয় যে এলাকায় ছড়িয়েছে সব থেকে বেশি, সেই ডোমকল এলাকাতেও একই ভাবে ইমামদের সাহায্য নেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে। শুধু মসজিদ নয়, প্রয়োজনে ইমামদের প্রশাসনের তরফে গ্রামে নিয়ে গিয়েও প্রচার করানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলার এক শীর্ষ কর্তা।
ডোমকলে এনআরসি’র সুযোগ নিয়ে রীতিমতো লোক ঠকানো শুরু হয়েছে। গ্রামবাসীদের হাতে আদ্যন্ত ভুয়ো কার্ড তুলে দেওয়ার অভিযোগও পেয়েছে জেলা প্রশাসন। এই আতঙ্কের সুযোগ নিচ্ছে কিছু কম্পিউটার সেন্টার। এনআরসি যেন রুজির দরজা খুলে দিয়েছে!’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘জালিয়াতি চলছে না এমন নয়, তবে খবর পেলে আমরাও ছুটছি। কাজ বেড়ে গিয়েছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy