Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

গতিতে মাত মহুয়ার, মুখে হাসি শান্তনুর

কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়ার এই গতি দেখা গিয়েছিল গত বিধানসভা ভোটেও।

বেথুয়াডহরিতে হুড খোলা গাড়িতে প্রচার মহুয়া মৈত্রের (ডান দিকে)। রাতে কৃষ্ণনগরে প্রচারে শান্তনু ঝা। ছবিগুলি তুলেছেন সুদীপ ভট্টাচার্য ও প্রণব দেবনাথ।

বেথুয়াডহরিতে হুড খোলা গাড়িতে প্রচার মহুয়া মৈত্রের (ডান দিকে)। রাতে কৃষ্ণনগরে প্রচারে শান্তনু ঝা। ছবিগুলি তুলেছেন সুদীপ ভট্টাচার্য ও প্রণব দেবনাথ।

সুস্মিত হালদার ও সন্দীপ পাল
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ১১:২৯
Share: Save:

রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছেন তিনি। পরনে শাড়ি। চোখে সানগ্লাস। তাঁর গতির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় নেতারা। পিছিয়ে পড়ছেন বারবার। যা দেখে অনেকেই বলছেন, এবার নাকি হেঁটেই বাকি প্রার্থীদের পিছনে ফেলে দেবেন মহুয়া মৈত্র।

দলের নেতা-কর্মীরাই বলছেন, কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়ার এই গতি দেখা গিয়েছিল গত বিধানসভা ভোটেও। রাজনীতিতে নবাগত মহুয়া সে বার নিজে ছুটে বেড়িয়েছিলেন করিমপুরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। এবারও নাকি তাঁকে সেই ‘মুডেই’ দেখা যাচ্ছে।

রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রচারে বার হন মহুয়া। প্রথমে বেথুয়াডহরিতে নেতাজির মূর্তিতে মালা দিয়ে শুরু করেন হাঁটা। সিনেমা হল রোড দিয়ে তিনি হেঁটে যান অগ্রদ্বীপের দিকে। তার গতির কাছে বারবার হার মানতে বাধ্য হন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। কখনও তিনি ঢুকে পড়েন রাস্তার পাশে কোনও দোকানে। একগাল হেসে হাত মেলান দোকানির সঙ্গে। আবার কখনও আচমকা দাঁড়িয়ে গিয়ে হাত মেলান রাস্তার পাশে আনাজের পসরা নিয়ে বসা বৃদ্ধার দিকে।

বেশ কিছুটা হাঁটার পরে আসে হুড খোলা গাড়ি। উঠে পড়েন তাতে। শুরু হয় যাত্রা। পিছনে গোটা কয়েক টোটো। ফাল্গুনের রোদ মাথায় করে তিনি গোটা দুপুর চষে বেড়ান গোটা বেথুয়াডহরি ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। মাঝে এক কর্মীর বাড়িতে সাময়িক বিশ্রাম। এই সেই নাকাশিপাড়া। যেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি অনেকটাই ভাগ বসিয়েছে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে। তিনি কি পারবেন সেখানে ফের তৃণমূলকে শক্ত মাটির উপর দাঁড় করাতে। প্রচারের ফাঁকে হাত নাড়তে নাড়তে মহুয়া সাফ জানিয়ে দেন, “মনে রাখবেন এটা লোকসভা ভোট। মানুষ আর সেই ভুলটা করবেন না।”

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রবিবার ছুটির দিন। খুব প্রয়োজন না পড়লে মানুষ বাড়িতেই থাকেন। তাই কোনও দল এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না। তারা এ দিন সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রচারে। তৃণমূলের মতো এই সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া ছিল সিপিএমও। সিপিএম প্রার্থী শান্তনু ঝা বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। সকালে বিশ্ববিদ্যালের কিছু কাজ সেরে বেরিয়ে পড়েন প্রচারে। দুপুরে চাপড়ায় কর্মিসভা সেরে নিয়েছেন। তারপর বাজার এলাকায় মিছিল করে হাঁটা। কথা বলেছেন পথচলতি মানুষের সঙ্গে। সেখান থেকে সোজা ধুবুলিয়া। সেখানেও কর্মিসভা সেরে আবার কৃষ্ণনগর। সেখান থেকে বৌবাজার এলাকায় মিছিলে পা মিলিয়েছেন রাতে। হাসিখুশি শান্তনুকে এ দিনও দেখা গিয়েছে পরিচিত মেজাজে। যা দেখে এক সিপিএম কর্মী বলেন, “এই মেজাজটাই তাঁর প্লাস পয়েন্ট। এই মেজাজেই তিনি এবার ঠিক জয় করে নেবেন ভোটারদের হৃদয়।”

অনেকটাই পিছনে থেকে শুরু করতে হচ্ছে বিজেপি প্রার্থীকে। এমনিতেই অনেক দেরিতে নাম ঘোষণা করায় প্রচারে পিছিয়ে বিজেপি। তার উপর প্রার্থী কল্যাণ চৌবে এলাকায় নবাগত। তিনি শনিবার রাতে ঢুকেছেন কৃষ্ণনগরে। ছিলেন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি হোটেলে। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সেখান থেকে তিনি একটি হুড-খোলা গাড়িতে করে চলে যান রাজবাড়িতে। সেখান থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে যান পাশেই আনন্দময়ী মন্দিরে। সেখানে পুজো দেন তিনি। তারপর চলে যান ঘূর্ণী গোডাউন মাঠে মহিলা মোর্চার সম্মেলনে। সারাটা দুপুর সেখানে কাটানোর পরে সন্ধ্যায় চলে যান মায়াপুরের ইসকন মন্দিরে। পুজো দেন। সোমবার থেকে তিনি গোটা এলাকা চষে ফেলার জন্য তৈরি হয়ে আছেন বলে দাবি করছেন বিজেপির জেলা নেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE