রূপালি বিশ্বাস। ফাইল চিত্র।
তাঁর এসপারেও লাভ, ওসপারেও লাভ। বা উল্টোটা।
রাজনীতি থেকে কয়েক যোজন দূরে থাকা রূপালী বিশ্বাসের ভোটের ময়দানে আসাটাই আকস্মিক। কিছুটা ভাগ্যচক্রেও বটে। বিধায়ক স্বামী সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পরেই তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু করে। অঙ্কটা ছিল, সমবেদনার ভোট তাঁকে নির্বাচনের বৈতরণী পার করে দেবে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রানাঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করার পরেই রূপালীর রাজনৈতিক পথ চলা শুরু।
সেই চলায় অন্যতম শক্তি যেমন ছিল রূপালীর দেড় বছরের সন্তান সৌম্যজিৎ, ওই সমবেদনার খাতিরেই, অন্যতম প্রতিবন্ধকতাও ছিল সে-ই। প্রথম দিকে বেশ কিছু ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই প্রচারে বেরিয়েছেন রূপালী। বিরাধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি—“ওইটুকু শিশুকে দেখিয়ে ভোট চাইছে তৃণমূল!” পোস্টারে-ব্যানারে শিশুর ছবি ব্যবহার করায় সিপিএম নির্বাচন কমিশনে বিধিভঙ্গের অভিযোগও করেছিল। এ দিকে চড়তে থাকা গরমে মায়ের সঙ্গে টানা প্রচারে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল সৌম্য। তখন তাকে বাড়িতেই রেখে বেরোতে হয়। প্রচার তখন গতি নিয়ে ফেলেছে। ফলে আর ছেলের দিকে ফিরে তাকানোর সুযোগ ছিল না রূপালীর।
ভোটপর্ব মিটেছে। মাকে কাছে পেয়ে ছোট্ট সৌম্য এখন অনেক বেশি চনমনে। মাকে সে সব সময় আঁকড়ে থাকতে চায়। রূপালী যদি হেরে গিয়ে রাজনীতির ময়দান ছেড়ে ফিরে যান, ছেলে তাঁকে বেশি পাবে সন্দেহ নেই। তার কাছে সেটা কম কথা নয়। কিন্তু রূপালী যদি জিতে যান, তা হলে নতুন সাংসদের পক্ষে ছেলেকে সময় দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। দলের নানা কাজ বাদেও সাংসদ হিসাবেও তাঁর নানা ব্যস্ততা থাকবে। মাঝে-মধ্যেই ছুটতে হবে দিল্লি। সংসদে উপস্থিত থাকতে হবে। তখন কী ভাবে তিনি এক সঙ্গে সামলাবেন রাজনীতির ময়দান আর সন্তান?
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এক সেকেন্ডও না ভেবে রূপালী বলছেন, “কোনও সমস্যা হবে না। এখন তো ওর বাড়ির লোকের কাছে থাকা অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া আমার মা-দিদিরা তো আছেই।” কিন্তু দিল্লি ছোটাছুটি করতে হবে যখন? রূপালী বলেন, “যেখানে ওকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে, সেখানে নিয়ে যাব। অসুবিধা হবে না।”
ঘর আর বারের মাঝে এই চৌকাঠে দাঁড়িয়ে রূপালী বিশ্বাস করছেন, যে সমীক্ষা যা-ই দেখাক না কেন, শেষ পর্যন্ত তিনিই জিতছেন। বলছেন, “গণনার পরেই সব উত্তর পেয়ে যাবেন।”
এক মাত্র কোনও টেনশন নেই সৌম্যের। সে দিব্যি তুরতুর করে বাড়িময় খেলে বেড়াচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy