বই নয়, শ্রেণিকক্ষে অনেক পড়ুয়ার নজর থাকে মোবাইলের স্ক্রিনে। এমন অভিযোগ পাওয়ার পরে কয়েক বছর আগেই মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্কুলে পড়ুয়াদের মোবাইল নিয়ে আসা নিষিদ্ধ করেন। বছরখানেক আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়েও শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। এ বার সেই পথেই হাঁটল
মধ্যশিক্ষা পর্ষদও।
মঙ্গলবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পড়ুয়াদের বিদ্যালয়ে মোবাইল আনার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মোবাইল ব্যবহারে রাশ টানতে ক্লাস চলাকালীন বা প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সাধারণ ভাবে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পড়াশোনার প্রয়োজনে মোবাইল বা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। পর্ষদের এই নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের অনেকেই। কেউ কেউ আবার বিদ্যালয়ে মোবাইলের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলছেন।
বহরমপুরের সৈয়দাবাদ মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের পরিচালন সমিতিতে আলোচনা করে বছর চারেক আগে পড়ুয়াদের বিদ্যালয়ে মোবাইল নিয়ে আসা নিষিদ্ধ করে। পড়ুয়ারা বিশেষ প্রয়োজনে বিদ্যালয়ের ল্যান্ডফোন যেমন নিখরচায় ব্যবহার করতে পারে, তেমনই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোবাইলও ব্যবহার করতে পারে। প্রধান শিক্ষক জসীমউদ্দিন আহমেদ বলছেন, ‘‘বিদ্যালয়ে অপ্রয়োজনে মোবাইল ব্যবহার করত পড়ুয়ারা। পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটত। তাই পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত মতো বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের মোবাইল আনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়ে জসীমউদ্দিন বলছেন, ‘‘অনেক সময় শিক্ষকেরাও অপ্রয়োজনে ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার করেন। তাতে রাশ টানতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে।’’
বহরমপুর আইসিআইতে পড়ুয়াদের মোবাইল ব্যবহারে কড়াকড়ি রয়েছে। তবে যারা অনেক দূর থেকে আসে তাদের অভিভাবকের অনুরোধে ছোট ফোন রাখতে
দেওয়া হয়।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে শাসকদলের শিক্ষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি শেখ মহম্মদ ফুরকান বলছেন, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা ছাত্র-শিক্ষক সকলের মেনে চলা উচিত।’’
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক দুলাল দত্ত বলছেন, ‘‘শ্রেণিকক্ষে মোবাইলে নিয়ে যাওয়ার ফলে পড়াশোনার ক্ষতি হয়। পর্ষদের নির্দেশকে স্বাগত। তবে এ ব্যাপারে নিয়মিত নজরদারিও চালাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy