Advertisement
১১ মে ২০২৪
যুগলে আত্মহত্যার চেষ্টা, দাবি জেরায়

রাজেশ খুনে জালে পীযূষ

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে যে আমবাগানে রাজেশ ও কিশোরীটি এক সঙ্গেই ছিল। প্রবল চাপের মুখে দু’জনে আত্মহত্যা করবে বলে ঠিক করেছিল। সেই কারণেই রাতে আমবাগানে যায়। সে ক্ষেত্রে রাজেশ ফাঁসে ঝুললেও মেয়েটি বেঁচে গেল কী করে তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার ভোরে যমশেরপুরের একটি বাড়ি থেকে পীযূষকে পাকড়াও করা হয়

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার ভোরে যমশেরপুরের একটি বাড়ি থেকে পীযূষকে পাকড়াও করা হয়

নিজস্ব সংবাদদাতা
হোগলবেড়িয়া  শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩৮
Share: Save:

রাজেশ খুনের মামলায় অবশেষে মূল সন্দেহভাজন পীযূষ ঘোষকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এর আগে পীযূষের বাবা-মা এবং বোনকে গ্রেফতার করা হলেও সে অধরা ছিল।

পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার ভোরে গোপালনগরের পাশের গ্রাম যমশেরপুরের একটি বাড়ি থেকে পীযূষকে পাকড়াও করা হয়। এ দিনই তাকে তেহট্ট আদালতে হাজির করিয়ে সাত দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে চাওয়া হয়েছিল। বিচারক তিন দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। একা এবং বাবা-মায়ের মুখোমুখি বসিয়ে পুলিশ তাকে জেরা শুরু করেছে। জেরার মুখে তারা দাবি করেছে, রাজেশকে খুন করা হয়নি। বরং পীযূষের বোনকে সঙ্গে নিয়ে সে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল।

সোমবার রাতে হোগলবেড়িয়ার গোপালনগর গ্রামের কালীতলাপাড়ার দিনমজুর রাজেশ রায়ের দেহ মেলে আমবাগানে একটি গাছ থেকে ওড়নার ফাঁসে ঝুলন্ত অবস্থায়। গ্রামেরই এক কিশোরীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। মেয়েটির পরিবার তুলনায় সচ্ছল, এই সম্পর্কে তাদের আপত্তি ছিল। ওই সন্ধ্যায় দু’জনে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন কিছু ক্ষণের জন্য। সেই সময়ে কিশোরীর দাদা পীযূষ দলবল নিয়ে এসে রাজেশদের বাড়িতে হুমকি দেয়, তাঁর মা ভক্তিলতার মোবাইলও ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ।

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে যে আমবাগানে রাজেশ ও কিশোরীটি এক সঙ্গেই ছিল। প্রবল চাপের মুখে দু’জনে আত্মহত্যা করবে বলে ঠিক করেছিল। সেই কারণেই রাতে আমবাগানে যায়। সে ক্ষেত্রে রাজেশ ফাঁসে ঝুললেও মেয়েটি বেঁচে গেল কী করে তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। রাজেশের পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, দু’জনেই যদি আত্মহত্যা করবে বলে ঠিক করে থাকে, তবে মেয়েটি অক্ষত রইল কী করে? কেন সে রাজেশকে আত্মহত্যা করতে বাধা দিল না? তবে কি বাড়ির রোষ থেকে বাঁচতে সে আত্মঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছিল রাজেশকে? আবার, এখন আত্মহত্যার গল্প ফেঁদে খুনের মামলাকে লঘু করার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।

রাজেশের বাবা পুলিশের কাছে আট জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। মঙ্গলবারই পুলিশ পীযূষের বাবা-মা ও বোনকে গ্রেফতার করে। বোন নাবালিকা হওয়ায় তাকে জুভেনাইল আদালতে হাজির করে হোমে পাঠানো হয়েছে। বাবা প্রভাস ও মা মনা ঘোষ আপাতত পুলিশের হেফাজতে। আমবাগান থেকে বছর সতেরোর ওই কিশোরীর সাইকেল ছাড়াও দু’টি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তার একটি পীযূষের। অন্যটি কার তা জানতে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। তবে রাজেশ ও তাঁর মায়ের খোয়া যাওয়া দু’টি মোবাইল ফোন শুক্রবার রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে মেলা দ্বিতীয় বাইকটি কার, তা-ও জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajesh Ray Piyush Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE