চোখ: আজ, শনিবারই শুরু সরস্বতী পঞ্চমীর। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শুক্রবার। কৃষ্ণনগরের গোলাপট্টির ত্রিমূর্তি ক্লাবে। ছবি: সুুদীপ ভট্টাচার্য
মন ভাল নেই মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষার মুখে সরস্বতী পুজো পড়লে কোনও পড়ুয়ার মেজাজ শরিফ থাকার কথাও নয়। সরস্বতী পুজো হল ছাত্রছাত্রীদের মহোৎসব। কিন্তু ছাত্রজীবনের ‘মহাপরীক্ষা’র আগে কিছুতেই সেই উৎসবে মনপ্রাণ খুলে হইহুল্লোড় সম্ভব নয়। পড়ার তাড়া, পরীক্ষার চিন্তা কোথাও একটা খচখচ করতে বাধ্য। তার উপর রয়েছে মাইক, সাউন্ড বক্স আর বিসর্জনের ডিজে-র শব্দতাণ্ডবের আশঙ্কা।
প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রাত ন’টার পরে মাইক বন্ধ করতে হবে। স্কুলের ২০০ মিটারের মধ্যে মাইক বাজবে না। আর সোমবার দুপুরের মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে। কিন্তু কথা হল, পরীক্ষার্থীরা তে আর স্কুলে থাকেন না। তাদের বাড়ির আশপাশে সারা দিন মাইক বাজবে, সন্ধের পর বহু জায়গায় অনুষ্ঠান হবে। ফলে মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
পঞ্জিকার হিসাবে অন্য বছরের তুলনায় থেকে এই বছর সরস্বতী পুজো যেমন পিছিয়ে গিয়েছে তেমনি পরীক্ষা এগিয়ে এসেছে প্রায় সপ্তাখানেক। তাতেই পরীক্ষার্থীদের টানাপোড়েন বেড়েছে। বিদ্যার দেবীকে বেশি প্রাধান্য দেবেন নাকি বিদ্যার্জনকে—অনেকেই এখনও ঠিক করতে পারেনি। কেউ ভাবছেন, ‘ধুর! সরস্বতী পুজোয় তো বই ছোঁয়াই বারণ!’ আবার কারও উপলব্ধি, ‘‘পরীক্ষার দু’দিন আগে পুজোয় না- মেতে শেষ মুহুর্তের রিভিশনেই মন দেওয়া উচিত।’
আগামী ১২ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিক শুরু হচ্ছে ২৬ ফ্রেব্রুয়ারি। সঙ্গে চলবে একাদশ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার পরীক্ষাও। সরস্বতী পুজো ১০ তারিখ। ফলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের হাতে তার পর আর মোটে ২ দিন সময় আর উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীদের ১৬ দিন। স্বভাবত কপালে ভাঁজ পড়েছে সকল পরীক্ষার্থীদের। বারোয়ারি পুজোর আয়োজকদের অনেকে জানাচ্ছেন, পুজো হবে আর মাইক বাজবে না তাতো হয় না। তবে ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে আওয়াজের মাত্রা কম রাখার কথা ভাবছেন তাঁরা।
যেমন কালীগঞ্জের ভুড়লিয়া গ্রামের সরস্বতী পুজোয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকলেও পুজো কমিটি জানিয়েছে, এই বছর সাউন্ড বক্সের সংখ্যা অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাটিয়ারি গ্রামের এক পুজো কমিটের সদস্য অমিত হালদারের কথায় আবার, ‘‘প্রতি বছরের মতো এ বছরও পুজোর দিন সন্ধ্যায় তাসার সঙ্গে আলোকসজ্জা নিয়ে শোভাযাত্রা বার হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষা বলে কোনও নিয়ম পাল্টানো হয়নি। প্রশাসন থেকেও তেমন কিছু জানানো হয়নি আমাদের।’’ মাটিয়ারির এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দেবরাজ দাস বলেন, ‘‘তাসা আর মাইকের আওয়াজে আমাদের পড়তে কষ্ট হবে বুঝে এখন থেকে রাত জেগে পড়াশোনা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy