মরে পড়ে আছে হাঁস-মুরগি। নিজস্ব চিত্র
হাঁসের ব্যবসায় ঢুকেছিলেন হরিশপুরের সুবীর মোদক। খামার তৈরি করেছিলেন। একটু-একটু করে দাঁড় করাচ্ছিলেন ডিম আর মাংসের ব্যবসা। এক রাতের আমপান তাঁকে কার্যত সর্বস্বান্ত করে দিয়ে গিয়েছে। ঝড়ে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে খামারবাড়ি। সাড়ে আটশোর মধ্যে তাঁর ছ’শোর বেশি হাঁস মারা গিয়েছে। ভাঙা খামারে ছড়িয়ে রয়েছে মরা হাসের দেহ। তার মধ্যে ইন্ডিয়ান রানার, খাকি ক্যাম্বেল রয়েছে। ঝড়ের পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। সুবীরবাবুর মতো জেলার ঝড়বিধ্বস্থ খামার-ব্যবসায়ীরা এত দিনেও সামান্যতম সরকারি সাহায্য পাননি। পাওয়া দূরে থাক, তাঁদের ক্ষতি নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করা বা ক্ষতিপূরণ ঘোষণাটুকুও হয়নি বলে অভিযোগ।
পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ফুলিয়ার মন্টু ঘোষের চারটি খামারের চাল আমপানে উড়ে গিয়েছে। মারা গিয়েছে ডিম পাড়া প্রায় পাঁচশো লেয়ার মুরগি। তাঁর সংস্থার তত্ত্বাবধানে থাকা প্রায় ২২টি পোলট্রির প্রচুর ব্রয়লার মুরগি বৃষ্টির ছাটে মারা গিয়েছে। মন্টুবাবু ‘ওয়েষ্টবেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনে’র নদিয়া জেলা সম্পাদক। তাঁর কথায়, “এমনিতে করোনার দাপটে পোল্ট্রি ব্যবসা লাটে উঠেছিল। তার উপরে আমপানে সব শেষ হয়ে গেল। এখনও পর্যন্ত আমাদের জন্য কোনও সরকারি সাহায্য বা ক্ষতিপূরণ নেই।”
সরকারি হিসাবে আমপানে জেলায় ৩ হাজার মুরগি, ৪০০ হাঁস, ৯টি গরু ও ১২টি ছাগল মারা গিয়েছে। ফার্ম ও গোয়াল মিলিয়ে ১৫৫ টি চাল ভেঙেছে। কিন্তু হরিশপুরের সুবীর মোদকের দাবি, এই হিসাব ভুল। ঝড়ে শুধু তাঁর খামারেই ৬০০-র বেশি হাঁস মরেছে। তাঁর মন্তব্য, “কে কী হিসেব করেছে জানি না। বিশ্বাস না হলে সরকারি কর্তাদের দেখে যেতে বলুন।”
কিন্তু বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চ্যুক্তিবদ্ধ হয়ে চাষ করা পোল্ট্রি ফার্মের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাবে ক্ষতিপুরণের সরকারি ভাবে কোন নির্দেশ দেওয়া নেই বলে কর্তাদের দাবি। যদিও এবার সেই ক্ষতির পরিমান জানতে চেয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মত তালিকা তৈরি করা শুরু করছে জেলার প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর। কিন্তু প্রায় পাঁচ দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও কেন নুন্যতম সরকারি সাহায্য পেলেন না ক্ষতিগ্রস্ত পশু ও হাঁস মুরগি পালকরা? এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চান নি দফতরের জেলা আধিকারিক অসীত কুমার ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy