Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হুমকি দিয়ে দরপত্র বদল করলেন তৃণমূল নেতা

ঘটনাটি সবিস্তারে জানিয়ে  লালগোলার বিডিও-র কাছে পুলিশি নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন ওই দুই বাস্তুকার।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

মৃন্ময় সরকার
লালগোলা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

অনুগামীদের ঠাঁই হয়নি সরকারি দরপত্রের তালিকায়, তাই দলবল নিয়ে সটান বাস্তুকারের দফতরে গিয়ে তাঁকে হুমকি দিয়ে গেলেন লালগোলা ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি আব্দুল মইদ। তাঁর হুমকিতে যে ‘কাজ’ হয়েছে মিলেছে তার নমুনাও, কারণ তাঁর শাসানির পরেই রাতারাতি বদলে গিয়েছে দরপত্রে অনুমোদন পাওয়া নামের তালিকা।

তবে ঘটনাটি সবিস্তারে জানিয়ে লালগোলার বিডিও-র কাছে পুলিশি নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন ওই দুই বাস্তুকার। ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, লালগোলার একটি হাই-মাদ্রাসার চারটি ঘর নির্মাণের জন্য অনলাইনে দরপত্রের ডাক দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। আবেদন করেছিলেন ছ’জন ঠিকাদার। তার মধ্যে নজরুল ইসলাম নামে এক ঠিকাদারের কাগজপত্রে গোলমাল থাকায় বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল আবেদন। কাগজপত্র ঠিক থাকায় কাজের বরাত পেয়েছিলেন আনিকুল ইসলাম। বিপত্তি ঘটে তাতেই!

‘কাছের’ ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া হল না কে? প্রশ্ন নিয়ে সদলে বাস্তুকারদের দফতরে চড়াও হন মইদ। অভিযোগ, প্রথমে অশ্রাব্য গালিগালাজ দিয়ে শুরু হয়েছিল ‘প্রতিবাদ’। চেয়ার-টেবিল চাপড়ে তাঁরা জানিয়ে যান, ‘এ বার দেখ কি হয়!’ ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানান, দুই বাস্তুকারের গায়ে হাতও তোলে আব্দুল মইদের এক সঙ্গী। তার পর বিডিও অফিসে পাড়ি দেওয়ার আগে বলে যান, ‘দেখ এ বার কি হয়!’

সোমবার আচমকাই সেই দরপত্রে নামের তালিকা বদলে যায়। আনিকুলের বদলে বরাত পেয়ে যান আব্দুলের ঘনিষ্ঠ নজরুল ইসলামই। কেন চাপের কাছে মাথা নোয়াতে

হল প্রশাসনকে?

দরপত্রের দায়িত্বে থাকা বাস্তুকার কাঞ্চনকুমার সিংহ বলেন, ‘‘নোটিস দিয়ে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যাদের কাগজপত্রে সমস্যা থাকবে তাদের দরপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই মতো নজরুল ইসলামের কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরে আব্দুল মইদ যা করল এখানে কাজ করব কি না ভাবছি।’’ তা বলে বেনিয়ম করে যুব সভাপতির কাছের লোককেই অনুমোদন দিলেন? কাঞ্চনের জবাব, ‘‘আমি তো দিইনি। পরে কী হয়েছে তা বলতে পারবেন বিডিও।’’

ঘটনার পর মুখে কুলুপ এঁটেছেন লালগোলা বিডিও শামসুজ্জামান। তাঁকে বারবার ফোন করা সত্ত্বেও সাড়া মেলেনি। এসএমএস কিংবা হোয়াটসঅ্যাপেরও জবাব দেননি তিনি। এ ব্যাপারে দরপত্রে প্রথম অনুমোদন পাওয়া আনিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কী বলব বলুন, এই অত্যাচার তো বছরের পর বছর ধরে মুখ বুজে সহ্য করছি।’’

আর আব্দুল মইদ? যেন আকাশ থেকে পড়ছেন, ‘‘ব্লক অফিসে কাটমানি নিয়ে টেন্ডার করা হয়েছিল। আমরা গিয়ে শুধু প্রতিবাদ করেছি মাত্র।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Tender
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE