সাংবাদিক পেটানোর ঘটনায় অবশেষে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বাকিদেরও ধরার চেষ্টা চলছে বলে তাদের দাবি।
গত সোমবার মনোনয়ন পেশের বাড়তি দিনে দুষ্কৃতীদের হাতে মার খান আনন্দবাজারের তিন সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহক। এক জনকে হুমকি দেওয়া হয়। বেলডাঙার সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়কে মাটিতে ফেলে বাঁশ, লাঠি, রড দিয়ে পেটানো হয়েছিল। তাঁর মাথা ফাটে। ঘাড়ের হাড়ে চিড় ধরে। আপাতত চার সপ্তাহ তাঁকে বিশ্রামে থাকতে হবে।
সেবাব্রত মারধরের অভিযোগেই বুধবার রামেশ্বরপুরের মানসুর শেখ ও দেবকুণ্ডের আরজু শেখকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পথ আটকানো, গুরুতর আঘাত ও সংঘটিত হামলার যে ক’টি ধারায় মামলা হয়েছে তার মধ্যে একটি জামিনঅযোগ্য। আজ, বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ সিজেএম আদালতে তোলা হবে। কিন্তু বাকি তিনটি ঘটনায় কাউকে ধরা হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে রামেশ্বরপুর, মহ্যমপুর, দেবকুণ্ড ও মির্জাপুরের লোকজন ছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। দেবকুণ্ডের কিছু লোককে থানায় ডেকে জেরা করে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি নাম পাওয়া যায়। বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তথা বেলডাঙা ১ (দক্ষিণ) ব্লক তৃণমূল সভাপতি আবু সইদ বলেন, ‘‘ওই দু’জনকে চিনতে পারছি না। তারা দলের কোনও পদে নেই। তবে দলীয় কর্মী হতে পারে।’’
ডোমকল এবং লালবাগে আক্রান্ত হয়েছিলেন দুই চিত্রগ্রাহক সাফিউল্লা ইসলাম এবং গৌতম প্রামাণিক। মাথায় যন্ত্রণা হতে থাকায় সাফিউল্লা এ দিন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্থি-শল্য চিকিৎসক এবং ইএনটি-কে দেখান। দুষ্কৃতীরা কানের নীচে ঘুষি মারলে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। তাঁকে চোয়ালের এক্স-রে করাতে বলা হয়েছে। কিন্তু দু’দিন পেরোলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। এসডিপিও (ডোমকল) মাকসুদ হাসান শুধু জানান, তদন্ত চলছে।
লালবাগে যারা মেরে গৌতমের চশমা ভেঙে দিয়েছিল, তারাও ধরা পড়েনি। মুর্শিদাবাদ থানার আইসি আশিস দেবের দাবি, হামলাকারীরা বহিরাগত হওয়ায় গ্রেফতার করতে দেরি হচ্ছে। বড়ঞায় রড হাতে সাংবাদিক কৌশিক সাহাকে হুমকি দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু বড়ঞা থানার ওসি অরিন্দম দাসেরও দাবি, ওই ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ অভিযুক্তদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বেলডাঙার কংগ্রেস বিধায়ক শেখ শফিউজ্জামানের অভিযোগ, সে দিন বিরোধীদের মনোনয়ন দাখিল করা রুখতে দেবকুণ্ড, মির্জাপুর, মহ্যমপুর, কাপাসডাঙা, সারগাছি, রতনপুর ও বেগুনবাড়ি থেকে বেলডাঙায় লোক এনেছিল তৃণমূল। এদের অনেকেই মত্ত অবস্থায় মারমুখী হয়ে ঘুরছিল। তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূলের অনুমতি ছাড়া এদের গ্রেফতার করা সম্ভব নয় বলেই পুলিশ ধরতে দেরি করছে।’’ জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সৌমিক হোসেন বলেন, ‘‘দল সাংবাদিক নিগ্রহ অনুমোদন করে না। দু’জনকে পুলিশ ধরেছে। বাকিদেরও ধরবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy