বহরমপুর ভৈরবতলার ভৈরব। নিজস্ব চিত্র
বাঙালির প্রাণের ঠাকুর, ঘরের ঠাকুর ভৈরব। আবার তাঁকে নিয়ে নানান রঙ্গ-রসিকতারও বিরাম নেই। সেই রসিকতার সরণি বেয়ে এ কালের বাঙালিও তাঁকে পুজো করেন রঙ্গরসিকতা করেন। তাঁর রকমারি নাম মাহাত্ম্যই তার বড় প্রমান। যেমন, ২ নম্বর বানজেটিয়ার ভৈরবের নাম ‘ভূমিবাবা’। ‘ভূমিবাবা’ কেন? পুজো কমিটির কর্তা গোপাল বণিক বলেন, ‘‘এই পুজোর অনেকেই জমি কেনাবেচার পেশায় যুক্ত। বাবার পুজো ও আনুসাঙ্গিক অনুষ্ঠানের খরচের প্রায় সবটাই তাঁরা দেন। এ কারণে এখানের মহাদেবের নাম রাখা হয়েছে ভূমিবাবা।’’ বহরমপুর শহরের খাগড়া-ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকার সুন্দর ভারতী স্কুলের দুই দিকে দু’টো ভৈরবের পুজো হয়। এক জনের নাম ‘প্রেমবাবা’। অন্য জনের ‘ডাববাবা’। একদা ভৈরবের পুজোর দিনে ভক্তদের কয়েকজন দেশি মদ খেয়ে ছিলেন কচি ডাবের জল দিয়ে। তার পর সেকি উদ্দাম নাচ। সেই থেকে তিনি ডাববাবা। আর ‘প্রেমবাবা’র মানত করলে নাকি প্রেম ব্যর্থ হয় না। স্বাভাবিক নিয়মেই প্রেমিক মানুষ তাঁকে ‘প্রেমবাবা’ বলেই ডাকবেন।
বান্ধব প্রেসে মোড়ের মহাদেব কেন ‘চিঁড়েবাবা’ তার ব্যাখ্যা না মিললেও তিনি বেশ ‘জাগ্রত’ বলেই এলাকার লোকজন মনে করেন। কোনও এক কালে নাদুস নুদুস ভৈরব ঠাকুরকে দেখে সৈয়দাবাদ-গোয়ালপাড়ায় এক ভক্ত বলে ওঠেন, ‘‘এ বার আমদের ভৈরব ঠাকুর দেখতে দারুণ হয়েছে। এক্কেবারে ঝাক্কাস!‘’ সেই থেকে লোকমুখে বাবা হলেন ‘ঝাক্কাসবাবা’। কুঞ্জঘাটার কাছে সে বার ভাগীরথী নদীর ভাঙন আটকাতে বোল্ডার ফেলা হয়। সেই থেকে বাবা হলেন ‘বোল্ডারবাবা’। নতুনবাজারের পোস্ট অফিসের কাছে ভোলানাথের নাম ‘বসবাবা’। নিজেদের পাড়ার ভৈরব ঠাকুরের আভিজাত্য বাড়াতে ভক্তরা আদর করে ‘বস’ আখ্যা দিয়েছেন, সেই থেকেই এমন নাম। নদীর ধারে সৈয়দাবাদ পার্কের পুজোর আয়োজনে কোনও বাহুল্য নেই। তাই তাঁর নাম ‘গরিববাবা’। সোনাপট্টি থেকে কাশিমবাজার যেতে হোতার সাঁকোর কাছে পুজোর মাত্র কয়েকটা দিন আগে ভৈরব পুজোর সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে ‘হঠাৎ বাবা’র আবির্ভাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy