সংশোধনাগারে ভিড়। নিজস্ব চিত্র
দিন ক’য়েক আগেরই কথা। বিনা মাস্কে যেন কেউ ফেরিপারাপার না করে তার জন্য জিয়াগঞ্জের সদরঘাটে সচেতনতা শিবির করেছিল জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। তার দিন দু'য়েক পরেই পুলিশের কাছে খবর আসে অনেকেই মাস্ক পরছেন না। সদরঘাটে অভিযান চালাতে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টায় জনা ত্রিশেক যাত্রীকে মাস্ক না থাকায় জরিমানা করে পুলিশ। এ ছাড়াও থানার টহল দেওয়ার গাড়িগুলোতেও করে মাইক বেঁধে জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ জুড়ে প্রচার তো চলছেই।
মাস্ক না পরলে যে জরিমানা করা হচ্ছে, তাতে আদালতে গিয়ে সেই ফাইনজমা করা, উকিল ফি মিলিয়ে মোটা টাকাও দিতে হচ্ছে। পুলিশি প্রচারে বারবার বলাও হচ্ছে মাস্ক না পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। এ ছাড়াও জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভার তরফেও অনর্গল প্রচার চলছে। জিয়াগঞ্জ থানার এক পুলিশ কর্মী বলছেন, ‘‘অনেকেই সচেতন নন। বিনা মাস্কে কেউ বাইরে বেরিয়ে পুলিশ গাড়ি দেখতে পেয়ে শহরের কোনও গলি দিয়ে ছুটে পালাচ্ছে।’’
সাধারণ মানুষের এমন ব্যবহারে চিন্তায় পড়েছেন জেলা চিকিৎসক মহল। মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শঙ্করনাথ ঝা বলেন, “বাড়িতে মাস্ক পরার দরকার নেই। কিন্তু বাড়ির বাইরে বেরোলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। যাঁরা পুলিশের ভয়ে মাস্ক ব্যবহার করছেন তাঁরা পুলিশকে নয়, নিজেকেই ফাঁকি দিচ্ছেন।” ওই চিকিৎসক আরও বলেন, “এখন নির্দিষ্ট লক্ষণ ছাড়াই মানুষ সংক্রামিত হচ্ছে। তাই একজন পরলাম আর একজন পরলাম না, এটা হতে পারে না। বাড়ির বাইরে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে।”
এদিন মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘জেলায় তৈরি কোভিড ওয়ারিয়র্স ক্লাবকে নিয়ে জেলার কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলোয় প্রচার চালানো হচ্ছে। এ ছাড়াও পুলিশের তরফে প্রচার চালিয়ে সকলকেই সচেতন করা হচ্ছে জেলা জুড়ে প্রতিদিন প্রায় চারশো থেকে পাঁচশো জনকে মাস্ক না পরার জন্য ফাইনও করা হচ্ছে। তারপরও অনেকে মানছেন আবার অনেকে মানছেন না।"
দিন দিন গোটা দেশ সহ রাজ্য ও মুর্শিদাবাদ জেলায় বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়াকে রুখতে বাইরে বেরোলে মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। মাস্ক না পরলে পুলিশ ফাইনও করছে। তবুও জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জে বিনা মাস্কেই ঘুরে বেরাচ্ছেন অনেকেই।
এ ছাড়াও বাজারে সামাজিক দুরত্ববিধির তো বালাই নেই। জিয়াগঞ্জ বাজারের একাধিক দোকানের সামনে দুরত্ববিধি মানার জন্য চুন দিয়ে গোল গোল দাগ কেটে দেয় পুলিশ ও পুরসভা কিন্তু সেই গোলাকার দাগকাটা প্রথম দিকে লোকজন মানলেও এখন তার আর কেউ মানতে চাইছে না।
আবার অনেকে দুর থেকে পুলিশ গাড়ি আসতে দেখলেই নাকে রুমাল বাঁধছেন আবার কেউ মুখ ঢাকছেন গামছা দিয়ে।
পুলিশ সূত্রে খবর জিয়াগঞ্জ থানা এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জনকে ফাইন করা হয় মাস্ক না পড়ে বাইরে বেরোনোর জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy