Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নোটের গুঁতোয় নাকাল নাটক

নোট-নাটকের জের এ বার সটান মঞ্চে। গত ডিসেম্বরে শুরুতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল নাটকের টিকিট। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে, নবদ্বীপে নাট্যোৎসবের উদ্যোক্তাদের মাইক ফুঁকে জানাতে হয়েছিল— ‘টিকিট সব শেষ। আর টিকিট চেয়ে লজ্জা দেবেন না। আপনাদের সহযোগিতায় আমরা ধন্য।’

নাটক ‘জতুগৃহ’। রবিবার বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে। —নিজস্ব চিত্র

নাটক ‘জতুগৃহ’। রবিবার বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১১
Share: Save:

নোট-নাটকের জের এ বার সটান মঞ্চে।

গত ডিসেম্বরে শুরুতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল নাটকের টিকিট। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে, নবদ্বীপে নাট্যোৎসবের উদ্যোক্তাদের মাইক ফুঁকে জানাতে হয়েছিল— ‘টিকিট সব শেষ। আর টিকিট চেয়ে লজ্জা দেবেন না। আপনাদের সহযোগিতায় আমরা ধন্য।’

আর এ বার? মাসটা সেই ডিসেম্বর। টেবিলে থরে থরে সাজানো টিকিট। কিন্তু যাঁদের জন্য এত আয়োজন সেই দর্শকেরা কোথায়? সুনসান টেবিলে ঘন ঘন চা-কফিতে চুমুক দিতে দিতে চলছে জটিল পাটিগণিতের হিসেব। নবদ্বীপ থেকে শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট কিংবা বহরমপুর থেকে জঙ্গিপুর ছবিটা সর্বত্রই কমবেশি একই রকম।

আলো ঝলমলে সন্ধ্যায় নবদ্বীপে যাঁরা টিকিট বিক্রি করছেন তাঁরা সকলেই আয়োজক সংস্থার লোক। ওঁদের কারও একদিন, কারও সাত অথবা দশ দিন পরেই নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার কথা। সকলেই ভেবেছিলেন, নোট বাতিলের মাসখানেকের মধ্যেই পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হবে। সেই ভরসায় বুক বেঁধে এ বারেও নাট্যেৎসবের আয়োজন করেছিলেন ওঁরা। কিন্তু টিকিট বিক্রির হাল দেখে উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত।

নবদ্বীপে এ বারের নাটক শুরু হচ্ছে তরুণ নাট্যগোষ্ঠী আয়োজিত ‘ফ্যাতাড়ু’ (১৩ ডিসেম্বর) দিয়ে। দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের সেই নাটকটির টিকিট বিক্রির বহর দেখে উদ্বিগ্ন উদ্যোক্তারা। সংস্থার তরফে বাপী চক্রবর্তী বলছেন, “এখনও পর্যন্ত সাকুল্যে সাড়ে তিনশো টিকিট বিক্রি হয়েছে। দলের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি এত বড় হলে তিন-চারশো লোককে তো খুঁজেই পাওয়া যাবে না।”

এর পরেই নবদ্বীপে মঞ্চস্থ হবে স্বপ্নসন্ধানীর নাটক ‘আন্তিগোনে’। আয়োজকদের তরফে গোবিন্দ দাস বলছেন, ‘‘লোকজন টিকিট কাটতে আসছেন কই! কী যে হবে বুঝতে পারছি না।” কৃষ্ণনগরের নাট্যসংস্থা পরম্পরার কর্ণধার শিবনাথ ভদ্র বলেন, “পর্যাপ্ত নগদ হাতে না থাকায় কেউ চট করে টাকা খরচ করতে চাইছেন না।”

বহরমপুরে দেশবিদেশের নাট্যমেলায় টিকিট বিক্রি করতে সমস্যায় পড়েছে আয়োজক সংস্থা ঋত্বিক। ঋত্বিক নাট্যদলের পক্ষে মোহিতবন্ধু অধিকারী জানান, নোট বাতিলের জন্য টিকিট বিক্রি গত বারের তুলনায় কম হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই সিজন টিকিট কাটলেও নোট বাতিলের জন্য তাঁদের অনেকেই এখনও টাকা দিতে পারেননি। অনেকে আবার পুরনো ৫০০ টাকার নোট দিয়েও টিকিট কেটেছেন। বাধ্য হয়েই সে টাকা নিতে হয়েছে। নাহলে টিকিট বিক্রি আরও কমে যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali Theatres Struggling Currency Ban
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE