Advertisement
১১ মে ২০২৪

জঙ্গলে ব্ল্যাক থান্ডার, খুনে পাঁচ অভিযুক্ত পাকড়াও

পুলিশ সূত্রে খবর, একের পর এক সন্দেহভাজনকে জেরা করতে করতে আলিপুরদুয়ার পুলিশের একটি দল পৌঁছে যায় নাগাল্যান্ড লাগোয়া অসমের কার্বি আলংয়ের জঙ্গলে। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় দুই যুবককে খুনে অভিযুক্তদের।

খুনে ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র

খুনে ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৩
Share: Save:

এমন জায়গায় গা ঢাকা দিয়ে ছিল সাত দুষ্কৃতী যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করে না। তবে শেষ রক্ষা হল না। সেখানেও পৌঁছল ‘ব্ল্যাক থান্ডার’! ধরা পড়ল বীরপাড়ার গুলিতে দুই যুবককে খুনে পাঁচ অভিযুক্ত।

পুলিশ সূত্রে খবর, একের পর এক সন্দেহভাজনকে জেরা করতে করতে আলিপুরদুয়ার পুলিশের একটি দল পৌঁছে যায় নাগাল্যান্ড লাগোয়া অসমের কার্বি আলংয়ের জঙ্গলে। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় দুই যুবককে খুনে অভিযুক্তদের। অভিযুক্তদের ধরতে ৩৫ জনের টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিল জেলা পুলিশ। অভিযানের নাম রাখা হয়েছিল ‘ব্ল্যাক থান্ডার’। এই ঘটনাকে বড়সড় সাফল্য বলে দাবি করেছে জেলা পুলিশ। ২০ ডিসেম্বর বীরপাড়ায় তোলাবাজি নিয়ে সিন্ডিকেটের গোলমালেই ওই দুই যুবককে গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল।

গত ২০ ডিসেম্বর সকাল আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে পাগলি এলাকায় একটি হোটেলে গুলি করা হয় স্থানীয় দুই যুবক জেঠা রাই (২৮) ও নিরঞ্জন ছেত্রীকে (৩৪)। পুলিশ সূত্রের দাবি, অভিযুক্তদের ধরাটা মোটেই সহজকাজ ছিল না। অভিযুক্ত কারও মোবাইল নেটওয়ার্ক মিলছিল না। তখনই পুলিশ অনুমান করে অভিযুক্তরা প্রতিবেশী দেশ লাগোয়া কোথায় রয়েছে। এরপরেই অভিযুক্তদের পরিচিত এবং এলাকায় কুখ্যাতদের ডেকে জেরা শুরু হয়। অন্তত একশো জনকে জেরা করে পুলিশ বুঝতে পারে অসমে পালিয়েছে অভিযুক্ত দলটি। ১ জানুয়ারি অসম পৌঁছয় টাস্ক ফোর্সের দল। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, অভিযুক্তরা অত্যন্ত হিংস্র, সে কারণে পুলিশও যথেষ্ট অস্ত্র নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, কার্বি আলঙের গ্রামে অভিযুক্তরা সকলে এক জায়গায় ছিল না। বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক দফায় সকলকে ধরা হয়েছে।

ধৃতেরা হল, রীতরাজ তামাং ওরফে বোকে, ও দীপরাজ ছেত্রী, ধীরাজ ছেত্রী, কুন্দন ভূজেল ও তাঁর ভাই শিবরাজ ভূজেল। ধীরজ সোনুয়ার ও বুধুরাম প্রধান নামে দুই গাড়ি চালককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “বোকে ও দ্বীপরাজ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করত। এরাই অভিযুক্তদের অন্যতম। দুষ্কৃতীদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, আলিপুরদুয়ারে এ সব চলবে না।’’ শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তুলে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশের দাবি, ধৃতেরা বীরপাড়া এলাকায় তোলাবাজি ও হুমকি দিয়ে মানুষকে ভয় দেখাত। মৃত দুই যুবকের সঙ্গে তাঁদের বচসা হওয়ায় তাঁরা গুলি করে। ঘটনায় নাইন এম এম ও সেভেন্ট পয়েন্ট সিক্স ফাইভ বোরের পিস্তল দিয়ে তাঁরা গুলি করে বলে জানিয়েছেন পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরা। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা প্রথমে বীরপাড়ার ভুটান সংলগ্ন প্রত্যন্ত এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছিল। পরে তারা ডিমাপুর নাগাল্যান্ড সংলগ্ন অসমের কার্বি আলংয়ের দিকে পালায় বলেও তদন্তে জেনেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Arrest Black Thunder Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE