Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নির্মল গ্রামের শৌচাগারের অবস্থা বেহাল, অভিযোগ

নির্মল গ্রামের শিরোপা মিলেছে। কিন্তু গ্রামে ঢুকলে সে কথা বোঝার উপায় নেই। কোনও শৌচাগার কাপড় দিয়ে ঘেরা। কারও আবার সেটাও নেই। ভিটে পাকা করে শুধু প্যান বসাানো রয়েছে। কোচবিহারের বহু এলাকাতেই সরকারি প্রকল্পে তৈরি শৌচাগারগুলির দশা এরকমই। এই নিয়ে ক্ষোভ চরমে উঠেছে বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫২
Share: Save:

নির্মল গ্রামের শিরোপা মিলেছে। কিন্তু গ্রামে ঢুকলে সে কথা বোঝার উপায় নেই। কোনও শৌচাগার কাপড় দিয়ে ঘেরা। কারও আবার সেটাও নেই। ভিটে পাকা করে শুধু প্যান বসাানো রয়েছে। কোচবিহারের বহু এলাকাতেই সরকারি প্রকল্পে তৈরি শৌচাগারগুলির দশা এরকমই। এই নিয়ে ক্ষোভ চরমে উঠেছে বাসিন্দাদের। সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও সেই চিত্র তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

শৌচাগার তৈরিতে সরকারি প্রকল্পের অধীনে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। প্রচারেও কোনও খামতি নেই। কিন্তু নির্মল গ্রাম হিসেবে ঘোষণা হওয়ার পরেও কেন এমন অবস্থায় পড়ে রয়েছে শৌচাগারগুলি, সেই প্রশ্নই তুলছেন গ্রামবাসীরা। বাড়ি বাড়ি শৌচাগার তৈরিতে প্রশাসনিক উদ্যোগে ব্যাপক কাজ হয়েছে বলে দাবি করলেও অভিযোগের কথাও স্বীকার করেছেন কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন। তিনি বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে।”

কোচবিহার জেলায় ইতিমধ্যেই ৭৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত নির্মল ঘোষণা হয়েছে। বাকি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে নির্মল গ্রাম তৈরির কাজ শেষ হবে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। কিন্তু নির্মল হিসেবে ঘোষিত এলাকাতেই যেখানে শৌচাগারের পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেখানে বাকি এলাকায় কী কাজ হচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসীরাই। তাঁদের অভিযোগ, দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকের সবক’টি গ্রাম পঞ্চায়েত নির্মল ঘোষণা হলেও বাস্তব চিত্র অন্য।

মনসেব শেওড়াগুড়ির এক বাসিন্দা জানান, তাঁর বাড়িতে সরকারি উদ্যোগে শৌচাগার তৈরি হলেও শুধুমাত্র প্যান বসানো ছাড়া আর কিছু হয়নি। তাঁ অভিযোগ, “যেভাবে শৌচাগার তৈরি হয়েছে তা ব্যবহার করা যায় না” আরও খারাপ অবস্থা দিনহাটা ১ নম্বর ব্লক, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ ও মেখলিগঞ্জের। অভিযোগ, সেখানে শৌচাগার তৈরির দায়িত্ব পাওয়া স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি কোনওরকমে কাজ সেরেছে। ফলে শৌচাগারগুলির কোনওটাই স্বাস্থ্য সম্মত হয়নি। জেলাশাসকের কাছে তা নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। মাতালহাটের পখিহাগা গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বলেন, “কোনওরকমে কাজ হয়েছে। ওই শৌচাগার ব্যবহার করা কষ্টকর।” তবে এ অভিযোগ মানতে চাননি দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকের নাজিরহাটের জেলা পরিষদের সদস্য তরণী বর্মন। তাঁর দাবি, তাঁরা শৌচাগার স্বাস্থ্যসম্মত করার দিকে লক্ষ্য রেখেছেন। তিনি বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বা কাপড় গিয়ে ঘিরে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেটা বড় কথা নয়। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী ঘর করেছে। কিন্তু শৌচাগারের আসল অংশটুকু স্বাস্থ্যসম্মত ভাবেই তৈরি হয়েছে।”

জেলায় বেশিরভাগ শৌচাগার তৈরি হয়েছে স্যানিটারি মার্টের মাধ্যমে। সেক্ষেত্রে একটি শৌচাগার তৈরিতে ১১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। নতুন বছরে যে যার শৌচাগার নিজেরাই প্রথমে তৈরি করার কথা বলা হয়। তারপরে গ্রাম পঞ্চায়েতের তালিকা মিলিয়ে তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “প্রত্যেকেই শৌচাগার ব্যবহার করুক এই লক্ষ্য নিয়েই কাজ এগোচ্ছে।’’ অভিযোগের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nirmal Gram Bathroom
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE